09/04/2024
বাঙালির খাওয়া মানেই সেখানে রসনা তৃপ্তি ও মনের শান্তি দুইই চাই। বাঙালি পারে অত্যন্ত সাধারণ রান্নাকে সাজিয়ে গুছিয়ে অসাধারণ করে তুলতে। বাঙালি রান্নাঘরে যেমন সবজি বাহার থাকে, তেমন স্বমহিমায় বিরাজ করে হরেক রকমের শাক পাতা। অতি সাধারণ শাকপাতা রন্ধন গুনে হয়ে ওঠে অসামান্য।
বাঙালির খাদ্যভান্ডারে নানাবিধ শাকের আনাগোনা। ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে শাক ও পরিবর্তন হয়ে য়ায়। অবাঙালিদের তো হাতে গোনা ক'টা শাক: পালক(পালং শাক), সরষো কা শাক(সরষে শাক), মেথি শাক ইত্যাদি।
এদিকে বাঙালিদের শাক এবং শাকের রেসিপি রকমারি। অনেক জায়গায় কালি পুজোর আগের দিন অর্থাৎ ভূত চতুর্দশীর দিন ১৪ রকমের শাক খাবার রীতি প্রচলিত আছে। ভাবুন আমরা বাঙালিরা ২-৩ রকম নয়, একদম ১৪ রকম শাক একসাথে মিশিয়ে খাই।
কচুশাক বলতে কচুগাছকেই বলা য়ায়। সাধারনত: শাক বলতে সবজির পাতা বোঝায়, কিন্তু এক্ষেত্রে আলাদা। কচুর পাতা বাদ দিয়ে শুধু পাতার ডান্ডি গুলো রান্না করা হয়। ইহা খেতে খুবই সুস্বাদু। ডান্ডি গুলোর সঙ্গে সামান্য কচু অর্থাৎ মুলের অংশ ব্যাবহার করলে কচুশাক আরো আঠালো এবং সুস্বাদু হয়।
গরম ভাতের সঙ্গে সুস্বাদু কচুশাক পার করে এসেছে অনেক বছরের রসনার ইতিহাস। ধোঁয়া ওঠা ভাতের সঙ্গে সর্ষের তেলের ঝাঁজ মেশানো কচুশাকের স্বাদ যেন আনমনেই বলে দেয় 'আহা'! সামান্য নারকেল কোরার ছোঁয়ায় কচুশাক হয়ে ওঠে আরও অনবদ্য।
আবহমান কাল ধরে কচুশাক বাঙালির রসনা তৃপ্ত করে এসেছে। এই রেসিপি এতই বিখ্যাত যে ঠাকুরবাড়ির রান্নার বইগুলোতেও ছোলা দেওয়া কচুশাকের বর্ননা আছে।
তবে কচুশাকের যে শুধুই স্বাদ রয়েছে তা কিন্তু নয়। বেশ কিছু গুণ রয়েছে এই শাকের। যেমন, কচু শাক গাঁটের ব্যথা দূর করে, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে, সর্বোপরি ওজন কমাতে সাহায্য করে। কচু শাক ফাইবার মেটাবলিজম এর প্রক্রিয়া বাড়িয়ে দিয়ে খাবার হজমে সাহায্য করে। তাছাড়া পেটের সমস্যাতেও উপকার করে কচু শাক। নিয়মিত কচু শাক খাওয়া ব্যক্তিদের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে, মানসিক চাপ কমাতেও সাহায্য করে। সব মিলিয়ে স্বাদে ও গুনে অন্য হাজারো রান্নাকে টেক্কা দিতে পারে হেঁসেলে রাঁধা বাঙালি প্রিয় কচু শাক।