OSRP

OSRP OM SARADA RAMKRISHNA PARIVAR

21/12/2022

Ok

01/08/2021

Pravrajika Divyananadaprana Ji will be live on Eternal Truth on Aug 1st at 11:00 a.m. Don't miss the opportunity to listen to such a prolific speaker on Yoga...

14/06/2021

A Step to Create Future Leaders With Updhriti - A Ray of Hope

16/09/2020

As per Vedic science, the universe is made up of 108 elements. And why 108 is auspicious for Hindus let us understand there are many reasons.

The Vedic cosmology believes diameter of Sun is 108.7 that of the earth.

The distance between earth and sun is 108 times the sun.

The distance between earth and moon is 108 times the diameter of the moon.

Our eyes can see up to 3 dimensions but sages could perceive with their yogic powers beyond these real metaphysical dimensions.
Power of 1= 1; Power of 2= 4; Power of 3= 27. And 1x4x27 = 108. This way our eyes perceive matter.

Shiva Purana records 108 karanas in Tandava (Cosmic dance) as employed in Yoga, Vedic martial Arts part of Dhanurvidya, Kalaripayattu and Kung Fu.

Sri yantra, is made of Marmas which are intersection of three lines. There are 54 such intersections, each having (masculine) Purusha - consciousness and (feminine) Prakriti - matter, qualities. Thus, there are 54×2=108 points. Sri yantra is made up of 54 pentagons and each angle of pentagon is 108 degrees.

The Atman or the human consciousness goes through 108 stages on its journey post death.

In Vedic astrology, there are 12 houses and 9 planets. 12 times 9 equals 108.

Ta**ra estimates, in 1 minute, a healthy human breathes 15 times, in 1 hour 900 times, and in 12 hours 10800 times. The average number of breaths per day is 21,600, of which 10,800 are solar energy, and 10,800 are lunar energy.

A Mala (Vedic rosary) is a string of 108 beads.

There are 27 Nakshatras (constellations) in our galaxy, each one them has 4 padas / Charan (directions), 27 x 4 = 108, which encompasses the whole galaxy.

Shrimad Bhagavatam has 108000 Shlokas.

54 letters in the Sanskrit alphabet. Each has masculine and feminine. 54 x 2 = 108 ....
Sanatan dharam ki jai🕉️🕉️🕉️🚩🚩🚩

The Vedic Philosopher

Hindu Activist Venkatesh Kadamb - Consciousness, Yoga, Vedanta Scholar

23/08/2020

স্বাধীনতা সংগ্রামীর মা............

সাবাজপুরের স্বাধীনতা সংগ্রামী মহিলা সিন্ধুবালা ঘোষ শুনেছিলেন যে, যে মহীয়সী মহিলার আশীর্বাদে বিবেকানন্দ পাশ্চাত্য জয় করেছিলেন তিনি হলেন শ্রীশ্রীমা - তখন তিনি কোয়ালপাড়ায় ছিলেন। তাঁর নিজের কথায় - লোককে জিজ্ঞাসা করে কেদারবাবুর বাড়িতে হাজির হলাম। এর আগে শ্রীশ্রীমাকে কখনও দেখিনি। ভাবছিলাম বাড়ির কাউকে শ্রীশ্রীমায়ের কথা জিজ্ঞাসা করব, এমন সময় এক বয়স্কা মহিলা আমাকে বললেন, "এস মা; তাই তো ভাবছিলাম, এত দেরী হচ্ছে কেন? আসতে কোন অসুবিধা হয়নি তো?" তাঁর কথাগুলো শুনে আমি এতই আশ্চর্য হয়ে গেলাম যে, আমার মুখ দিয়ে আর কোন কথাই বের হল না। তিনি আমায় চেনেন না, আমি আসবো - তাও কেউ জানেনা, অথচ তিনি সব কিছু জানেন - এমনভাবেই কথাগুলো বললেন। আমি এত বিহ্বল হয়ে গেলাম যে, কোন কথা না বলে তাঁকে প্রণাম করলাম। তারপর তিনি দুহাত দিয়ে আমাকে জড়িয়ে ধরে চুমো খেলেন। কী অপূর্ব স্নেহমাখানো আদর - জীবনে যেন কারো কাছেই এত ভালবাসা পাইনি - এমন মনে হল। তারপরই তিনি বাড়ির অন্যদের ডেকে বলতে লাগলেন, "দেখ মা, মেয়ের আমার মুখ যেন আগুন! মা, তুই আগুনরাঙ্গা হয়ে থাক - অনেক কাজ করতে হবে তো।"......গোরা পুলিশের হাতে পড়লে দ্বীপান্তর দেবে, নয়তো ফাঁসিতে লটকাবে। বাড়িতে খুব অশান্তি। বাবা বিয়ে ঠিক করে ফেলেছেন। কি যে করব ঠিক করতে না পেরে বেশ কয়েক বছর পর বার কোয়ালপাড়া যাত্রা করলাম - একাই। গিয়ে শুনলাম, তিনি কালই এসেছেন। শ্রীশ্রীমাকে আড়ালে ডেকে নিয়ে আমার সমস্যার কথা বললুম। মা মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বললেন, "মা, এটাও তো কাজ; দেখনা মা, সব দুটি করে - এই চোখ, এই হাত, এই পা। দেশের কাজে শুধু ছেলেরা এলে কি হয় মা, মেয়েদেরও তো এগিয়ে আসতে হবে। তুমি তো মা খুকীকে (ভগিনী নিবেদিতা) দেখনি, সেও আগুনের মত তেজি ছিল। তবে মা সাবধানে সব করতে হয়; সংসারও করবে, সাধ্যমত সে কাজও করবে। দরকার হলে ভেক ধরে কাজ করবে, যাতে কেউ টের না পায়, তবে সব সময়ে ঠাকুরকে স্মরণ করবে, তিনিই রক্ষা করবেন।"(সাবর্ণ গুহ)

জয় মা!!!

06/08/2020

We should always bear in mind that we are all souls, Atman. This Atman has put on a human personality, with a view to play a part in the Cosmic drama of life. Whatever be the part that is assigned to us, that part has to be played well; that means, we have to perform the duties of life and work in a spirit of detachment, as a form of service to God.
- Swami Yatiswarananda (How to become spiritually Awakened)

26/07/2020

"পুণ্যাত্মাদের সঙ্গ করা উচিত। কিন্তু পুণ্যাত্মা কারা? কেবল সন্ন্যাসীরা পুণ্যাত্মা? স্বামী তুরীয়ানন্দকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, 'যে ব্যক্তি কে দেখামাত্রই ভগবানের কথা স্মরণ হয়, তিনি পুণ্যাত্মা। তিনি সংসারী হতে পারেন বা সন্ন্যাসী, নারী বা পুরুষ -যাকে দেখে ঈশ্বরের কথা মনে হয় তিনি পুণ্যাত্মা ব্যক্তি।"
---- শ্রদ্ধেয় স্বামী গৌতমানন্দজী মহারাজ।
🌷🙏🌸🙏🌺🙏🌸🙏🌺🙏🌸🙏🌺🙏🌸🙏🌷

13/07/2020
Swamiji in Dubai
16/06/2020

Swamiji in Dubai

14/06/2020

*Today's Vivekananda Quote*

This hankering after name and fame and all other humbug—what are they to me? What do I care about them? I should like to see hundreds coming to the Lord! Where are they? I want them, I want to see them. You must seek them out. You only give me name and fame. Have done with name and fame; to work, my brave men, to work!

_From Chicago: January 11, 1895. Letter to G. G. Narasimhachariar. Complete Works, 5. 66._

Sequential reverence*Today's Vivekananda Quote* If the room is dark, do you go about beating your chest and crying, “It ...
13/06/2020

Sequential reverence
*Today's Vivekananda Quote*

If the room is dark, do you go about beating your chest and crying, “It is dark, dark, dark!” No, the only way to get the light is to strike a light, and then the darkness goes.

The only way to realize the light above you is to strike the spiritual light within you, and the darkness of sin and impurity will flee away. Think of your higher self, not of your lower.

_Talk given at Unity Hall, Hartford (Connecticut), USA, on March 8, 1895, as reported in “Hartford Times” (March 11, 1895). Complete Works, 1. 327._

13/06/2020

which means a perfect balance of all the struggling forces in all the planes, can never be in this world. Before you attain that state, the world will have become quite unfit for any kind of life, and no one will be there. We find, therefore, that all these ideas of the millennium and of absolute equality are not only impossible but also that, if we try to carry them out, they will lead us surely enough to the day of destruction.

12/06/2020

*Today's Vivekananda Quote*

Whenever you see the most humanitarian ideas fall into the hands of the multitude, the first result you notice is degradation. It is learning and intellect that help to keep things safe. It is the cultured among a community that are the real custodians of religion and philosophy in their purest form. It is that form which serves as the index for the intellectual and social condition of a community.

_Sayings and Utterances. Complete Works, 5. 418._

11/06/2020

✍ The history of the world is the history of a few men who had faith in themselves. That faith calls out the divinity within. You can do anything. You fail only when you do not strive sufficiently to manifest infinite power. As soon as a man or a nation loses faith, death comes.
-Swami Vivekananda

05/06/2020

হে জগন্নাথ রামকৃষ্ণ সকল জীবের মঙ্গল করো,আলোর ঠিকানা দাও ।
🙏🌹🌹🌹🙏

02/06/2020

জপ

কারও কাছে কিছু চাইবে না। মনে মনে মানুষের কাছে ভালো ব্যবহার, ভালো কথা, ভালো কাপড়, ভালো খাবার কিছু চাইবে না, আশা করবে না। জগৎ তো ভগবানের। ভগবান যদি দেন, হবে। না যদি দেন, তাতেও হবে। সাধনার প্রচণ্ড কৃচ্ছ্রতা এযুগে তোমরা পারবে না বলেই স্বামীজী নতুন করে, যুগোপযোগী করে এই সাধনার পত্তন করলেন। জেনো, এ-পথে থাকা খুব কঠিন। ‘ক্ষুরস্য ধারা’। সাধু খুব alert থাকবে। সব কাজে expert হবে আর খুব সপ্রতিভ থাকবে। যে কাজই কর, সবসময় ইষ্টমন্ত্র জপ করবে। যখন পায়খানা পরিষ্কার করছ, তখনও repeat the holy name, যখন কাজের মধ্যে বকুনি খাচ্ছ, তখনও গুরুর বা ইষ্টের চিন্তা করো। দ্যাখো, কিছু পাও কিনা। পাবেই পাবে। পাবেই পাবে। পাবেই পাবে।
যত্ন ও অভ্যাসের দ্বারা মনকে বশীভূত করতে হবে। মন বশীভূত না হলে জপে মন স্থির হবে না। মন স্থির না হলে জপের দ্বারা মনের গভীরে যাওয়া যাবে না। মনের গভীরে না ঢুকলে কিছু লাভ করা যাবে না। লাভ করা কি যায়? সামনে একটা কালো পর্দা ফেলা আছে। তাকে সরানো যায় না। মনকে কোনরকম ট্রেনিং দেওয়া হয়নি। তাই এই মনকে রক্ষা করতে হলে খুব যত্ন ও অভ্যাস করতে হবে।
ভালোবাসা আনতে চেষ্টা করো। দু-বেলা আসন পেতে বসে একটু জপ করে উঠে পড়লে হবে না। যেটুকু জপ করবে, খুব ভালোবাসার সঙ্গে অন্তরের অন্তরে ঢুকে গিয়ে করবে। জপ করার সময়, মন্ত্রের অর্থ এবং যাঁর নাম তাঁকে মনের মধ্যে আনবে। এই করাটা একদিন বা দুদিন করলে হবে না। করতে হবে নিরন্তর। শ্রীশ্রীমা রাত তিনটের সময় উঠে জপে বসতেন। তা সেই ছোটবেলায় এই কাজ শুরু করেছিলেন। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত একভাবে করে গেলেন। যেটাই করবে সেটাই নিরন্তর দীর্ঘকাল ধরে করবে।
জীবনকে যদি মধুময় করে তুলতে চাও, তবে জপধ্যানের দ্বারা মনের গভীরে ঢুকতে হবে। ভাসা-ভাসা জপ করলে হবে না। জপধ্যান খুব মন দিয়ে নিষ্ঠার সঙ্গে দীর্ঘসময় ধরে করা অভ্যাস করো। যদি না কর— ব্রহ্মচর্য কী, সন্ন্যাস কী বুঝতে পারবে না। জপধ্যান যদি না কর, সঙ্ঘ তোমায় কিছুই বলবে না। তুমিই তোমাকে নিয়ে বিব্রত হয়ে পড়বে। নিজে শান্তি পাবে না, অন্যকেও শান্তি দিতে পারবে না। মায়ের সব কাজে এগিয়ে যাবে। সব কাজ মন-প্রাণ দিয়ে করবে। কীসে ত্যাগ, বৈরাগ্য ও ঈশ্বরে নির্ভরতা বাড়ে তার দিকে খুব দৃষ্টি রাখবে। মনে মনে মায়ের সঙ্গে যোগ রাখবে। কারও মনে ব্যথা দিয়ো না। যদি কেউ কটু কথা বলে, উত্তর কোরো না। যদি খুব লাগে, মাকে জানিয়ো। খুব মন দিয়ে, প্রাণ ঢেলে অনেকক্ষণ স্থির হয়ে জপ করে যাবে। জপ যখন ঠিক ঠিক হবে তখন অন্তরের শক্তি জেগে উঠবে। তখন ধীরে ধীরে মায়ের দিকে টান বাড়বে। শ্রীশ্রীঠাকুর ও মা অন্তরে আছেন। সাধনার দ্বারা তাঁদের ভালোবাসাকে উপলব্ধি করো।
যে পথে তোমরা এসেছ সে পথে সার্থকভাবে যদি চলতে চাও তবে চাই ‘শ্রদ্ধা’, এ পথের প্রতি শ্রদ্ধা। আমরা আরাম করতে আসিনি। দুঃখকে স্বীকার করতে হবে। একমাত্র মাকে ভালোবেসে আসা। অন্য কারও ব্যবহার দেখার প্রয়োজন কী? অন্তরে দৈবী শ্রদ্ধার উদয় হলে বীর্যলাভ হবে। সেই বীর্যই জোগাবে পথ চলার শক্তি। আপন অহংকারকে দু-পা দিয়ে মাড়িয়ে চলে গিয়ে শ্রদ্ধা ও বীর্য সহায়ে এ পথ ধরে যদি চলতে পার, তবেই কিছু লাভ করবে। নতুবা কিছু পাবে না। শ্রীশ্রীঠাকুরের প্রচণ্ড শক্তি এখানে কাজ করছে। যদি মিথ্যাচার কর, তিনি তোমাদের আঘাত দেবেনই জেনো।

‘প্রব্রাজিকা মোক্ষপ্রাণা’ গ্রন্থ থেকে

10/04/2020
National youth daySat sat naman
12/01/2020

National youth day
Sat sat naman

Ma
05/01/2020

Ma

03/01/2020

রামকৃষ্ণ শরণম

ঠাকুর শেখালেন,জীবনটাকে গণিত করে তুলো না।

জীবন তো এক সংগীত, তাকে গাইতে হয়। শিল্পীর মতো তাকে রং - রূপ দিতে হয় । তাই তো বললেন রশে বশে থাকতে।

সমাজ থেকে যদি অন্যায়- অনাচার দূর করতে হয়,তবে মানুষকে শেখাও কিভাবে আনন্দময় জীবন গড়ে তুলবে সে।

নিরানন্দ মানুষ, অস্থির মানুষ, বিভ্রান্ত মানুষই, অন্যের উপর অত্যাচার করে।

বিরক্ত মানুষই অন্য মানুষকে বিরক্ত করে।

যে মানুষ আনন্দে আছে, নেতিবাচক চিন্তা তার থাকে না।

সমস্যা জীবনকে নিয়ে নয়,
সমস্যা মনকে নিয়ে।

তাই তো ঠাকুর বললেন, *"তোমাদের চৈতন্য হোক"*।

~ স্বামী সোমেশ্বরানন্দ।
🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏

জয় রামকৃষ্ণ। জয় মা। জয় স্বামীজী।
Happy new year to one and all.

06/09/2019

Greetings with some good news for the women’s world. Just recently, one of the most prestigious mathematics prizes in the world – The Abel Prize was awarded to a woman for the first time ever. Yes! Karen Uhlenbeck is a mathematician and a professor at the University of Texas and is now the first...

05/09/2019

শেষনাগে সেই রাত(সত্য ঘটনা)(অলৌকিক)
( #স্বাতী_মুখার্জি right protected)
ঘটনাটা আজ থেকে পাঁচ বছর আগের।আমরা অমরনাথ যাত্রায় গিয়েছিলাম সে বছর।চন্দন‌ওয়ারি থেকে হাঁটা শুরু করি।চন্দন‌ওয়ারি দিয়ে উঠবো আর বালতাল দিয়ে নামবো,এই পরিকল্পনা করেই আমরা গেছিলাম।(আমি ছাড়াও আমার স্বামী, দিদি, মা ও গিয়েছিলেন।)
পবিত্র গুহায় পৌঁছাতে গেলে মোটামুটি দু রাত তিনদিন লাগে(চন্দন‌ওয়ারি দিয়ে হেঁটে গেলে)।
প্রথম রাত কাটাতে হবে শেষনাগে। দ্বিতীয় রাত পঞ্চতরণীতে। পিস্সুটপের মতো চড়াই পেরিয়ে আমরা কোনরকমে শেষনাগ পৌঁছলাম।
শেষনাগের সৌন্দর্য অনির্বচনীয়, প্রকৃতির বিরল নমুনা,একটা ঝিল আছে,একটু ভালো করে দেখলে মনে হয় ঝিলের চারপাশ জুড়ে এক বিশাল সাপ যেন কুন্ডলী পাকিয়ে শুয়ে আছে।কিন্তু তখন কিছু ‍উপভোগ করার মতো পরিস্থিতি ছিল না। মনে হচ্ছিলো শরীরে এনার্জি বলে কিছু নেই, হাড়গোড় নিয়ে শুধু চলছি।এত ক্লান্ত যে বলার নয়।এ রাস্তায় কোনো হোটেল নেই রাত্রি বাসের জন্য,সরকারি তাঁবু।তখন ভাড়া ছিল বেড প্রতি দুশো টাকা।একটা তাঁবুতে আটজন থাকার ব‍্যবস্থা।আমরা সবাই তাঁবুতে ঢুকলাম। সূর্য পশ্চিমে ঢলে পড়েছে।ঠাণ্ডা হাওয়ার দাপটে প্রাণ ওষ্ঠাগত,বাধ্য হয়ে তাঁবুর ভিতরে গিয়ে বসলাম। তাঁবুতে ইউ পি থেকে দুজন,ঝাড়খন্ড থেকে দুজন সব মিলে আটজন আশ্রয় নিই।
এমনিতে অপরিচিত কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যেই ভালো আলাপ হয়ে গেল সবার সঙ্গে।ইউ পি থেকে যারা এসেছেন তাদের মধ্যে একজন একটু বয়স্ক ,নাম সুকদেও।উনি প্রতিবছর অমরনাথ আসেন।
কথায় কথায় সুকদেওজী হিন্দিতে বললেন, অমরনাথ আসি,দুটো কারণে,মহাদেবের টান তো আছেই,আর একটা কারণ ভারী অদ্ভুত।প্রথমবার যখন অমরনাথ আসি,সঙ্গে ছিলেন আমার শ্বশুরমশাই।উনি এই শেষনাগে এক অদ্ভুত দৃশ্য আমায় দেখান।
এখানে প্রতিদিন শেষরাতে ঘটে ওই ঘটনা।
-কি ঘটে?একজন প্রশ্ন করলো
- তাঁর দর্শন হয়।
-কার.... আমি প্রশ্ন করলাম।
সুকদেওজী বললেন, শেষনাগ দেবতার।ওনার দর্শনের জন‍্যও আমি প্রত‍্যেকবার যাত্রায় আসি।
সত্যি বলতে কি কথাটা আমার হজম হল না। বললাম, আজকের দিনে এসব হয় না ,ওটা আপনার মনের ভুল।
ভদ্রলোক বিরক্ত হলেন বুঝলাম, একটু উত্তেজিত হয়ে বললেন, তোমার বিশ্বাস হচ্ছে না তো?এক কাজ কর ,আমি মাঝরাতে যখন দর্শন করতে যাব,তোমরাও চল।নিজের চোখে দেখতে পাবে,বুঝবে মনের ভুল না দেবতার কৃপা,কি যাবে?
সবাই সানন্দে রাজি হল,আমি আর কথা না বাড়িয়ে শুয়ে পড়লাম।এমনিতেই যা ঠাণ্ডা লাগছিল তাঁবুর ভিতরেও, বাইরে তো হাওয়ার তান্ডব চলছে তাঁবু পুরো কাঁপছে।
মনে মনে ভাবলাম, যত্ত বাজে থিওরি।
কখন ঘুমিয়ে পড়েছি জানি না,হঠাৎ একটা হালকা আওয়াজে ঘুমটা ভেঙে গেল।এদিক ওদিক তাকিয়ে দেখি, সুকদেওজী উঠে বসে আছেন, টর্চ জ্বেলে।এমনিতে তাঁবুর ভিতরে কোনো আলো নেই।
উঠে বসলাম, আমায় উঠতে দেখে বললেন,'আপকো উনহোনেহি উঠায়া, জরুর কৃপা মিলেগা আপকো।'....কথা বাড়ালাম না ,মোবাইল অন করে দেখি দুটো বাজে।উনি বললেন, ‍ঢাই বাজে হম নিকলেঙ্গে,আপ আপনে লোগো কো উঠা দিজিয়ে,উনহে ভি দর্শন করনা চাহিয়ে।
মনে মনে বললাম দূর যত্ত সব ঝামেলা, এই ঠাণ্ডায় এখন শেষনাগ ঝিলের ধারে কে যাবে?
আশ্চর্যের বিষয়, সকলের দেখি ঘুম ভেঙে গেছে, আমার হাজবেন্ড আমাকে বললেন, যাবে তো?আমি বললাম, ওসব ফালতু, এই ঠান্ডায় আমি নেই।
উনি বললেন, আরে চলই না ,কিছু তো এক্সপেরিয়েন্স হবে,রাতে ঝিলটা কেমন লাগে সেটাও তো দেখা যাবে।
অগত্যা আড়াইটে বাজতেই সবাই একসাথে বেরলাম।প্রচণ্ড ঠান্ডা, হাওয়ায় যেন হার্টবিট বন্ধ হয়ে যাবে মনেহচ্ছে।
আকাশে চাঁদ আছে, তবুও টর্চ জ্বালিয়ে যেতে হচ্ছে, অন‍্য কোনো বৈদ‍্যুতিক আলো নেই।
আমরা একটু নীচের দিকে নামলাম,কারণ ঝিলটা নীচে।
গিয়ে দেখি অনেকেই ঝিলের কাছে দাঁড়িয়ে।
ঘড়ি দেখলাম, দুটো পঞ্চাশ।হেঁটে এসেছি বলে, অতটা ঠাণ্ডা লাগছিল না। সুকদেও জী বললেন,সবাই ঝিলের দিকে তাকান,শেষনাগের ছায়া ঝিলে পড়বে।সবাই আগ্রহ নিয়ে তাকিয়ে।
অদ্ভুত এক নীরবতা চারিদিকে।আমার বিশ্বাস হচ্ছে না যে কিছু দেখা যাবে।আমি একটা পাথরের ওপর গিয়ে বসলাম।
ইতিমধ্যে অনেকেই ধৈর্য্য হারিয়ে ফেলছে বুঝতে পারছিলাম। উসখুস করছে ।অন‍্যরা তাদের চুপ করতে বলছে, মোবাইল, টর্চ জ্বালতে বারণ করছে।
আমি ঝিলের দিকে তাকিয়ে দেখি, টলটলে পরিস্কার জল ,চাঁদের আলো পড়েছে। দারুণ লাগছিলো।
হঠাৎ যেন মনে হল,পরিবেশটা দ্রুত চেঞ্জ হয়ে যাচ্ছে।কেমন... সেটা ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না, ফিলিং এর ব‍্যপার।আমি উঠে সবাই যেখানে দাঁড়িয়ে সেখানে গেলাম।সুকদেওজী ফিসফিস করে বলে উঠলেন,' ওহ দেখো ভগবান আ গয়ে'
সঙ্গে সঙ্গে ঝিলের দিকে তাকালাম...শিহরণ খেলে গেল শরীরে,এতক্ষন যে জলটা ঝকঝক করছিল চাঁদের আলো পড়ে, এখন সেখানে এক বিরাট ফণাধারী সাপের ছায়া। মাইগড ...ছায়াটা আবার একটু একটু নড়ছে। চারিদিকে একটা অজানা সুবাস ছড়িয়ে গেল।
চোখ ঘসে ভালো করে দেখলাম, হ‍্যাঁ সাপের ছায়া।
কথা বেরচ্ছিলো না আর মুখ থেকে।নিজের মূর্খতার জন্য লজ্জিত হলাম।সবাই প্রণাম করছে ওনাকে, আমিও ক্ষমা চেয়ে প্রণাম করলাম।
সত্যি আজও অনেক কিছু আছে, যার কোনো ব‍্যাখ‍্যা নেই।বিশ্বাস করি ওটা দেবভূমি।🙏🏻

31/08/2019

○○○ #স্বামী_গৌতমানন্দ_মহারাজ○○○

--- স্বামী সোমেশ্বরানন্দ

..........

মহারাজ রামকৃষ্ণ মঠ-মিশনের অন্যতম ভাইস-প্রেসিডেন্ট। চেন্নাই আশ্রমে (মায়লাপুর) এখন রয়েছেন। তার সাথে পরিচয় দীর্ঘকাল। হাসিখুশি মানুষ, সহজ ব্যবহার, কথায় আন্তরিকতা। খুব স্নেহ করতেন আমাকে। মাতৃভাষা তামিল হলেও বাংলা পড়তে-বলতে পারতেন। আমার সাথে বাংলাতেই কথা বলতেন।
মহারাজকে প্রথম দেখি বেলুড়মঠে। যখন তিনি আলং (অরুণাচল প্রদেশ) শাখার অধ্যক্ষ, আমি চেরপুঞ্জিতে। একবার শিলং আশ্রমে দেখা। তখন আমাদের স্কুলে শীতের ছুটি (প:বঙ্গে যেমন গরমের ছুটি থাকে)। গৌতমানন্দজী বললেন, "দেড় মাস ছুটি। কি করবে? আলং চলো, কাজ আছে।" টেনে নিয়ে গেলেন। ওখানে স্কুলের ম্যাগাজিন বেরুবে। তাই সাহায্য করতে হবে।
সে-সময় মহারাজের সাথে অনেক কথা হতো। পাহাড়ি জঙ্গলে ঘুরতাম। একবার নিয়ে গেলেন ভারতের শেষ সীমায়। সামনে অনেকটা জায়গা খুড়ে রাখা, জলহীন নদীর মতো। ওপাশে তিব্বত।

মহারাজের বিষয়ে অনেক কথা মনে পড়ছে। আজ সব না বলে তার এক বৈশিষ্ট্য নিয়ে আলোচনা করা যাক। খুব সাহসী ছিলেন তিনি। এমনকি মৃত্যুর সামনেও ভয় পেতেন না। অথচ মুখে কোনো টেনশনের ভাব নেই। ঐ হাসিমুখ। এমন এক ঘটনা বলি।

ছত্তিশগড়ে বস্তার অঞ্চল। বিশাল এলাকা জুড়ে ঘন জঙ্গল। আদিবাসী মানুষদের এলাকা। ওখানে অবুঝমাড়ের নারায়ণপুরে রামকৃষ্ণ মিশনের বিরাট শাখা। হাইস্কুল, আদিবাসী ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য আলাদা হস্টেল, কারিগরী শিক্ষা সংস্থা, ছোট হাসপাতাল ইত্যাদি। বিভিন্ন গ্রামে গড়ে তোলা হয়েছে অনেক ন্যায্য দামের দোকান, আদিবাসী যুবক-যুবতীদের দ্বারা। স্থানীয় লোকেরা ওখানেই কেনা-বেচা করে।
মাওবাদীরা সক্রিয় ওখানে। মাঝেমাঝেই মিশনের সাথে মতান্তর ঘটে কাজের ব্যাপারে। মহারাজেরা স্বাধীনভাবে কাজ করতে চান। একবার তো রীতিমতো গরম স্থিতি। জঙ্গলের মধ্যে একটা নদী। সেখানে ব্রীজ হলে অনেকগুলি গ্রামকে জোড়া যায়। লোকদের যাতায়াতে সুবিধা হয়। রামকৃষ্ণ মিশন ব্রীজ তৈরির ব্যবস্থা করতেই মাওবাদীরা বাধা দিল। তাদের আপত্তি, যাতায়াতের সুবিধা হলে পুলিশ আসতে পারে।
এই নিয়ে বাদ-প্রতিবাদ শুরু হলে গ্রামের আদিবাসীরা মহারাজকে সমর্থন করে মাওবাদীদের বলে বাধা না দিতে। শেষে মাওবাদীরা মেনে নিল ব্রীজ তৈরির কর্মপ্রকল্প।

এই সময় গৌতমানন্দ মহারাজ এক দুঃসাহসী সিদ্ধান্ত নিলেন-- মাওবাদীদের আস্তানায় গিয়ে নেতাদের সাথে কথা বলা। গ্রামবাসীদের মাধ্যমে যোগযোগ করলে তারা রাজী হয়। একদিন রাতে আরেকজন সাধুকে নিয়ে মহারাজ নির্দিষ্ট স্থানে পৌঁছুলে তাকে দুজন অস্ত্রধারী নিয়ে যায় জঙ্গলের গভীরে।
রাতের অন্ধকারে গভীর জঙ্গলের ভেতর দুজন মহারাজ অনেকক্ষণ হাঁটতে লাগলেন। বেশকিছু পরে পৌঁছালেন এক দূরবর্তি গ্রামে। সেখানে গ্রামবাসীদের সাথে বসে আছেন মাওবাদী নেতা। কাছে চারজন গার্ড রাইফেল নিয়ে পাহারায়।
সাদরে আমন্ত্রণ জানালেন ঐ নেতা। বললেন, রামকৃষ্ণ মিশন সম্বন্ধে আমি জানি, আপনারা খুব ভাল কাজ করছেন। গৌতমানন্দজীর সাথে নেতার আলোচনা হলো খোলামনে। শেষে নেতা বললেন, আপনারা স্বাধীনভাবে কাজ করুন, মিশনের কাজে আমরা কোনো বাধা দেব না। ঐ রাতেই মহারাজ জঙ্গলের অন্ধকার রাস্তা হেঁটে ফিরে এলেন।
পরের দিন কাগজে খবর বেরুলো যে ঐ অঞ্চলে 7-8 জন মাওবাদী ঢুকেছে। পত্রিকা পড়ে অন্যান্য সাধুরা হাঁফ ছাড়লেন যে গৌতমানন্দজী খুব বড় বিপদ থেকে রক্ষা পেয়েছেন। হাসিমুখে মহারাজের মন্তব্য: চিন্তা করোনা, তিনজন সিকিউরিটি গার্ড সঙ্গে ছিলেন, ঠাকুর-মা-স্বামীজি।

এরপর জঙ্গলের মধ্যে অনেকগুলি গ্রামে প্রাথমিক স্কুল তৈরি হয় মহারাজের উত্সাহে। নদীর বিভিন্ন স্থানে 5টি ছোট বাঁধ করা হয়, বিভিন্ন গ্রামে বড়বড় পুকুর কাটা হয় বৃষ্টির জল ধরে রাখার জন্য। এভাবে বহু অঞ্চলে জল-সমস্যা দূর হলো। আদিবাসীরা সারা বছর পানীয় ও চাষের জল পেতে থাকে।
অবস্থা এমন হলো যে গভীর জঙ্গল থেকে বাঘ, ভালুক, হরিণ ইত্যাদি পশু-পাখীও আসে ঐ জলাশয়গুলি থেকে জল খেতে।

ঈশ্বর-নির্ভরতা কতটা হয়েছে সেটা বোঝা যায় সংকটের সময়, মৃত্যুর মুখোমুখি হলে। গৌতমানন্দ মহারাজের মধ্যে সেটা দেখেছি।

জীবনে সুখ-দুঃখ চক্রাকারে ঘোরে৷ দুঃখের সময় ভেঙে পড়লেই ব্যস, হেরে যাওয়া৷ ভয় নেই ৷ ঠাকুর সর্বদা হাতটি ধরে আছেন ৷ তাঁর অমৃতসমান বাণী যে কোনও লড়াইকে সহজ করে মুহূর্তে৷

30/08/2019

পূজনীয় প্রভবানন্দজীর স্মৃতিচারণে অদ্ভুদ একটি ঘটনার উল্লেখ পাওয়া যায়। রামকৃষ্ণ মিশনের প্রথম দিকের সন্ন্যাসী স্বামী প্রভবানন্দ ঠাকুরের প্রায় সব পার্ষদদেরই সেবা করেছেন, মা সারদারও দর্শন পেয়েছেন কয়েকবার। ইনি ছিলেন বিষ্ণুপুরের বিখ্যাত উকিল কুমুদ ঘোষের ছেলে, মা জ্ঞানদাদেবী ছিলেন অশেষ ভক্তিমতি, শিবের সেবায় নিরত। ছেলে অবনি ঘোষ কিন্তু উকিল না হয়ে বাবার ইচ্ছার বিরুদ্ধে সন্ন্যাসী হলেন। বাবা অনেক চেষ্টা করেও ঠেকাতে পারেননি।
নবীন সন্ন্যাসী স্বামী প্রভবানন্দ সবে ভুবনেশ্বর মঠে এসেছেন। তাঁর উপর ভার পড়ল ঠাকুরের নিত্য পূজা করার। তখন এমন একটি ঘটনা ঘটল যাতে সবাই উপলব্দ্ধি করলেন যে ঠাকুরের পূজা কতটা সাবধানে করতে হয়। একদিন প্রভবানন্দজী মিষ্টি আর একটা শসা কেটে নৈবেদ্য সাজিয়ে দিয়েছেন। সাধারণত নৈবেদ্য রেখে ঘরের দরজা বন্দ্ধ করে বাইরে ধ্যানে বসে পূজারী নৈবেদ্য নিবেদন করেন; সেদিন গরমের জন্য ও শরীর ঠিক না থাকায় মহারাজ নিজের ঘরে এসে বসলেন। একটু পরেই দেখলেন এক সুন্দর ব্রাহ্মণ বালক সূক্ষ্ম শরীরে তাঁকে বলছে--- "তুমি ঠাকুরের শসায় নুন দিয়েছ তো? ঠাকুর কিন্তু নুন ছাড়া শসা খেতে পারেন না।" এই কথা বলে বালক অদৃশ্য হয়ে গেল। তখন ভুবনেশ্বর মঠে স্বামী আত্মানন্দজী ছিলেন। প্রভবানন্দজী ব্যাপারটা তাঁকে বলে নির্দেশ চাইলেন। আত্মানন্দজী বললেন--- "ঠিক কথা। ঠাকুর নুন ছাড়া শসা খেতে পারেন না। তুমি হাতে করে একটু নুন নিয়ে গিয়ে নৈবেদ্যর থালায় রেখে আবার দরজা বন্ধ করে দিয়ে এস।" প্রভবানন্দজীও তাই করলেন। ঠাকুর যে ভক্তি ভরে শুদ্ধ চিত্তে নিবেদন করা নৈবেদ্য গ্রহণ করেন তা হাতে হাতেই প্রমাণ পেলেন।

30/08/2019

।। #সঙ্গী - গীতা।।

মনে পড়ে , এক সাধু উত্তরকাশীতে তপস্যায় যাবেন। সঙ্গে কী কী বই নেবেন তাই ঠিক করছেন । এমন সময় এক প্রাচীন সাধু ঘরে এসে দেখেন , তপস্যাকামী সাধুটি সুটকেসে বই ভরছেন । প্রাচীন সাধুটি বললেন : ' কি ব্যাপার! তুমি অত বই নিয়ে কি সেখানে শাস্ত্রপাঠ ও research করতে যাচ্ছ ? দেখ সাধন -- ভজন ও শাস্ত্র অধ্যয়নের মধ্যে একটু পার্থক্য আছে। প্রথমটিতে spiritual developed হয় , আর দ্বিতীয়টিতে intellect developed হয় । তুমি তপস্যা করতে যাচ্ছ -- ভগবানের সান্নিধ্য , দর্শন ও অনুভূতির চেষ্টা কর। মাত্র দুখানা বই সঙ্গে নিয়ে যাও -- গীতা ও কথামৃত। সকালে গীতার ধ্যান করবে -- যার ফলে তোমার মনের ভয় , সন্দেহ , দ্বিধা চলে যাবে। স্বামী তুরীয়ানন্দ একজন সাধুকে বলেছিলেন -- গীতার একটি শ্লোক মুখস্থ কর , তার অর্থ জান , তারপর তার ওপর ধ্যান কর , নিজজীবনে প্রতিফলিত কর। এভাবে গীতাকে জীবনসঙ্গী কর।

' আর রাতে কথামৃত পড়বে। এটি তোমাকে সৎসঙ্গ দেবে। হিমালয়ের নির্জনস্হানে ঠাকুর তোমার সঙ্গে থাকবেন। জেনে রেখো , যে - ভগবান কুরুক্ষেত্রে অর্জুনকে গীতার উপদেশ দিয়েছিলেন, সেই একই ভগবান শ্রীরামকৃষ্ণরূপে এসে গীতার উপদেশ কিভাবে জীবনে প্রতিফলিত করতে হয় তা দেখিয়ে গেলেন। আমাদের অধ্যাত্মজীবনের জিজ্ঞাসা ও পিপাসা মেটানোর জন্য #গীতা ও #কথামৃত যথেষ্ট ।' ~~~~

গীতা প্রসঙ্গে
স্বামী চেতনান্দ।
শারদীয়া সংখ্যা
উদ্বোধন - ১২১তম বর্ষ।
আশ্বিন ১৪২৬।

29/08/2019

*Swami Advaitananda*

Pre-monastic name
Gopal Chandra Ghosh

Date of Birth
Some day in 1828

Place of Birth
Rajpur, Jagaddal

North 24 Parganas, West Bengal

Advaitananda was oldest in age among the disciples of Sri Ramakrishna; in fact he was older than Sri Ramakrishna himself by eight years. Hence the Master used to call him ‘Budo-Gopal’ (Elder Gopal); to all the others he was ‘Gopal-da’.
Gopal-da was an employee of Beni Madhav Pal of Sinthi who was a Brahmo and also devoted to Sri Ramakrishna. At the age of 55 Gopal-da lost his wife, and became grief-stricken. A friend took him to Sri Ramakrishna. After two or three visits he was so much drawn to the Master that he gave up hearth and home and came to live with him. Gopal-da was the only male devotee, other than Latu, to whom Holy Mother Sri Sarada Devi talked directly. He would run errands and do shopping for her. During Sri Ramakrishna’s last illness Gopal-da served the Master with devoted care.
After the Master’s passing, Gopal, Latu and Tarak continued to stay at Cossipore garden-house for some more time, and they were the first to join the Baranagar Math. He underwent sannyasa ordination and became Advaitananda. After a year he went out on pilgrimage to different places and also did tapasya for several years in Varanasi.
When Belur Math was established he settled himself permanently there, and did various types of work especially growing vegetables. After a brief illness he passed away, while remaining fully conscious, on 28 December 1909.

28/08/2019

বেলুড় মঠের অজানা কথা

বোধহয় একেই বলে ঠাকুরের ইচ্ছে। এমনই তাঁর মাহাত্ম্য। আজ যে বিস্তৃত ভূখণ্ডে বিশ্ববিখ্যাত বেলুড় মঠ, তারই অন্তত একাংশে একসময় চরণচিহ্ন এঁকে দিয়ে গিয়েছিলেন ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ স্বয়ং।
স্বামী বিবেকানন্দ মঠের জন্য ওই জমি কিনেছিলেন বিহারী ভদ্রলোক বাবু ভাগবৎনারায়ণ সিংয়ের কাছ থেকে। ছোট দুটি বাড়িসমেত ২২ বিঘা। ১৮৯৮ সালের ৪ মার্চ। তবে স্বামীজির জানা ছিল না যে, তারও আগে ওই জমিতেই ছিল ঠাকুরের গৃহী ভক্ত ‘কাপ্তেন’ বিশ্বনাথ উপাধ্যায়ের কাঠগোলা। সেখানেই একদা পদধূলি দিয়েছিলেন ঠাকুর। আমরা জানি, ঠাকুর মর্তলীলা সংরবণ করেন ১৮৮৬ সালের ১৬ আগস্ট। অর্থাৎ বেলুড়ে ওই জমি কেনার অনেক আগেই ঠাকুর সেখানে গিয়েছিলেন। যেন স্থায়ী মঠ স্থাপনের উদ্দেশ্যেই সেখানে ‘কুটোবাঁধা’ হয়ে গিয়েছিল। স্থায়ী মঠের জন্য অন্যত্র জমি সংগ্রহের সকল চেষ্টাই শেষাবধি ব্যর্থ হয়েছিল। এই ঘটনাকে দৈবনির্ধারিত ছাড়া কীইবা বলা যায়।

বিশ্বনাথ উপাধ্যায় ছিলেন নেপালের রাজার ভারতে নিযুক্ত উকিল। রাজপ্রতিনিধিরূপেই তিনি কলকাতায় বাস করতেন। বেলুড়ে নেপালরাজের একটি কাঠগোলা ছিল। প্রথম দিকে বিশ্বনাথ উপাধ্যায় ওই কাঠগোলাতেই কর্মচারী নিযুক্ত হন। তখন শ্রীরামকৃষ্ণের সান্নিধ্যলাভমাত্রই তিনি ঠাকুরের পরম ভক্ত হয়ে ওঠেন। ঠাকুর তাঁকে আদর করে ‘কাপ্তেন’ ডাকতেন। কাপ্তেনের অনুরোধেই ঠাকুর বেলুড়ের ওই কাঠগোলা ঘুরতে যান।
ওই স্থান মাহাত্ম্য সম্পর্কে স্বামী গম্ভীরানন্দ এক স্থানে সারদা দেবীর মুখে বলেছিলেন,

‘‘আমি কিন্তু বরাবরই দেখতুম, ঠাকুর যেন গঙ্গার ওপরে এই জায়গাটিতে—যেখানে এখন (বেলুড়) মঠ, কলাবাগান-টাগান—তার মধ্যে ঘর, সেখানে বাস করছেন।’’

জমিটি সংগ্রহের পর শ্রীমা আরও বলেছিলেন, জমিটা ঠাকুরের ইচ্ছাতেই হল। মঠের জন্য জমিটা তিনিই নির্বাচন করে গিয়েছিলেন!

বেলুড়ে জমি তো কেনা হল। কিন্তু তা অসমতল। অতএব সেখানে মঠ নির্মাণ করতে একটু সময় লাগবে, তার তদারকিও দরকার। অতএব বেলুড়েই কাছাকাছি নীলাম্বর মুখোপাধ্যায়ের বাগানবাড়ি ভাড়া নেওয়া হল। মঠ অস্থায়ীভাবে স্থানান্তরিত হল সেখানেই। বারাণসীর সমতুল গঙ্গার পশ্চিম তীরের এই বাড়িতেই শ্রীমা বসবাস করার সময় ছোট ছাদে পঞ্চতপা ব্রত করেছিলেন। সদ্য-কেনা কাপ্তেনের কাঠগোলার মঠভূমিতে ঠাকুরকে স্বামীজি প্রতিষ্ঠা করেন এই বাড়ি থেকেই। ১৮৯৮ সালের ৯ ডিসেম্বর স্বামীজি নতুন মঠের জমিতে শ্রীরামকৃষ্ণের ‘আত্মারাম’কে পুজো করে পায়েস নিবেদন করেন। আর সকাতরে প্রার্থনা করেন, ঠাকুর তুমি ‘বহুজনহিতায়’ এখানে স্থির হয়ে থেকো।
বেলুড় মঠে দাঁড়িয়ে গুরুভাইদের বিবেকানন্দ সেদিনই বলেছিলেন,

"কাশীপুরে ঠাকুর আমায় বলেছিলেন, ‘তুই কাঁধে করে আমায় যেখানে নিয়ে যাবি, আমি সেখানেই যাব ও থাকব। তা গাছতলায় কি, আর কুটিরই কি।’ সেজন্যই আমি স্বয়ং তাঁকে কাঁধে করে নতুন মঠভূমিতে নিয়ে যাচ্ছি। নিশ্চয় জানবি, বহুকাল পর্যন্ত ‘বহুজনহিতায়’ ঠাকুর ওই স্থানে স্থির হয়ে থাকবেন।

প্রত্যেক ভক্ত ঠাকুরকে আপন বুদ্ধির রঙে রাঙিয়ে এক-এক জনে এক-এক রকম দেখে ও বোঝে। তিনি যেন মহাসূর্য, আর আমরা যেন প্রত্যেকে এক-এক রকম রঙিন কাচ চোখে দিয়ে সেই একই সূর্যকে নানা রং-বিশিষ্ট বলে দেখছি। এটি ঠিক সেই ভাবের কেন্দ্রস্থান হবে। এখান থেকে যে মহাসমন্বয়ের উদ্ভিন্ন ছটা বেরবে তাতে জগৎ প্লাবিত হয়ে যাবে। ঠাকুরের ইচ্ছেয় আজ তাঁর ধর্মক্ষেত্র প্রতিষ্ঠা হল। বারো বছরের চিন্তা আমার মাথা থেকে নামল। আমার মনে এখন কী হচ্ছে জানিস? এই মঠ হবে বিদ্যা ও সাধনার কেন্দ্রস্থান। ... সময়ে সব হবে। আমি তো পত্তন-মাত্র করে দিচ্ছি। এর পর আরও কত কী হবে !"

জীবনের উপান্তে এসে স্বামীজি বলেছিলেন,

"আমি যে নিষ্কর্মা সাধু হয়ে থাকিনি, সে বিষয়ে অন্তর থেকে আমি নিঃসন্দেহ। প্রাণ ঢেলে খেটেছি। আমার কাজের মধ্যে সত্যের বীজ যদি কিছু থাকে, কালে তা অঙ্কুরিত হবেই।"

শ্রীশ্রীমাও এই মঠভূমি দেখতে এসেছিলেন। তাই পরে তিনি বলেছিলেন, অত্যন্ত শান্ত জায়গা বেলুড়ে তিনি খুব ভালো ছিলেন। তাঁর ধ্যান লেগেই থাকত। তাই ওখানে একটি ‘স্থান’ করতে নরেনের ইচ্ছে হয়েছিল।

শ্রীরামকৃষ্ণ নির্দেশিত পথে রামকৃষ্ণ সঙ্ঘ গঠন করেছিলেন স্বামী বিবেকানন্দ। ১৮৮৬ সালে। অর্থাৎ ঠাকুর যে-বছর দেহসংবরণ করলেন সে-বছরই। বরাহনগরের এক জীর্ণ বাড়িতে। যা ‘বরাহনগর মঠ’ নামে রামকৃষ্ণ-সাম্রাজ্যে সুপরিচিত। সুদীর্ঘ ৩৪ বছর এই রামকৃষ্ণ সঙ্ঘকে লালিত ও পালিত করেছেন সঙ্ঘজননী সারদা দেবী। সেই রামকৃষ্ণ সঙ্ঘের বাস্তব রূপ দিলেন স্বামী বিবেকানন্দ বাগবাজারে বলরাম মন্দিরে ১৮৯৭ সালের ১ মে। নাম হল রামকৃষ্ণ মিশন। আর বরাহনগর মঠ রূপান্তরিত হল ‘রামকৃষ্ণ মঠ’-এ। এই বরানগরে থাকতেই বিবেকানন্দের মন ঠিক করে নিয়েছিল স্থায়ী মঠ ঠিক কোথায় হবে। বরাহনগর খেয়াঘাটে দাঁড়িয়ে তিনি একদিন গুরুভাইদের বলেছিলেন, আমার কেন যেন মনে হচ্ছে গঙ্গার ওপারে কাছেপিঠেই আমাদের স্থায়ী মঠটি হতে চলেছে।

বেলুড় মঠের জমি কেনার পর স্বামীজি সওয়া চার বছর জীবিত ছিলেন। এই সংক্ষিপ্ত সময়ের মধ্যেই তিনি মঠ প্রতিষ্ঠার মূল কাজগুলি সাঙ্গ করে গিয়েছিলেন। মিশন তৈরির পর তার কলকাতা কেন্দ্রের ভার দেওয়া হয়েছিল স্বামী ব্রহ্মানন্দকে। অন্যদিকে, ১৮৯৮ সালে বেলুড়ে নতুন মঠ নির্মাণের কাজ শুরু হলে তার দায়-দায়িত্বও ব্রহ্মানন্দের ওপর ন্যস্ত হল। পরের বছর আলমবাজার থেকে বেলুড়ে নতুন বাটিতে মঠ উঠে আসার পর বেলুড় মঠ পরিচালনার ভারও তাঁকে নিতে হল। অবশেষে ১৯০০ সালের আগস্টে দলিল তৈরি করে মঠের যাবতীয় বিষয়-সম্পত্তি স্বামীজি গুরুভাইদের হাতে তুলে দিলেন। আর ১৯০১ সালের গোড়ার দিকে মঠ ও মিশনের সাধারণ সভাপতির আসন ত্যাগ করলেন স্বামীজি। অতঃপর স্বামী বিবেকানন্দের স্থলাভিষিক্ত হলেন স্বামী ব্রহ্মানন্দ। ঠাকুর বলেছিলেন,

‘রাখাল একটা সাম্রাজ্য চালাতে পারে।’

বিবেকানন্দ এবং তাঁর গুরুভাইরা রাখাল মহারাজের উপর ঠাকুরের এই অগাধ আস্থার কথা ভোলেননি। মঠ কী আকার নেবে স্বামীজি তা বুঝিয়ে দিয়েছিলেন অপর গুরুভ্রাতা স্বামী বিজ্ঞানানন্দকে, পূর্বাশ্রমে যিনি ছিলেন একজন দক্ষ সিভিল ইঞ্জিনিয়ার। মন্দিরের প্রতীক স্বামীজি তৈরি করার পর মন্দিরের নকশা স্বামীজির তত্ত্বাবধানে তৈরি করেছিলেন বিজ্ঞানানন্দজি।

স্বামীজি শুধু এক বাগ্মী হিন্দু সন্ন্যাসী ছিলেন না, একই সঙ্গে ছিল তাঁর শিল্প সাহিত্য বিজ্ঞান সমাজ রাজনীতি দর্শন প্রভৃতি সম্পর্কে অত্যন্ত আধুনিক চিন্তা চেতনা। ভারত এককালে ছিল শিল্পের দেশ। কিন্তু স্বামীজির জীবদ্দশায় ভারতের শিল্পচেতনা লুপ্তপ্রায় হয়ে এসেছিল। দেশের এই হতশ্রীদশা তাঁকে নিরন্তর আহত করত। তাই সঙ্কল্প করেছিলেন, বেলুড় মঠের ভেতর দিয়েই ভারতীয় শিল্পচেতনা বিকাশের পুনর্নবীকরণ করবেন। সাহেবদের শিল্পভাবনার হুবহু নকল করে বেলুড় মঠ নির্মিত হবে না—যা তৎকালীন ভারতের এক ব্যাধি হয়ে উঠেছিল। বেলুড় মঠের প্রতীক ও নকশায় আমরা স্বামীজির ওই দেশজ এবং মিশ্র শিল্পভাবনার সমন্বয়ের প্রতিফলনই প্রত্যক্ষ করি। বেলুড়ে বর্তমান মন্দিরটির উদ্বোধন হয় ১৯৩৮ সালের ১৪ জানুয়ারি পৌষ সংক্রান্তির দিন। মঠের তৎকালীন অধ্যক্ষ স্বামী বিজ্ঞানানন্দ নতুন মন্দিরে ঠাকুরকে স্থাপন করেন। মঠের পুরনো মন্দির থেকে বুকে করে আত্মারামকে নিয়ে এসে নবনির্মিত মন্দিরে ঠাকুরের মূর্তির সামনে রেখে প্রার্থনা করেন। সেইসময় তিনি প্রত্যক্ষ করেন স্বামীজিসহ তাঁর অন্য গুরুভাইরা সূক্ষ্ম শরীরে উদ্বোধন দেখতে মন্দিরে উপস্থিত হয়েছিলেন। উল্লেখ্য যে, ১৯২৯ সালের ১৩ মার্চ শ্রীরামকৃষ্ণের জন্মতিথিতে রামকৃষ্ণ সঙ্ঘের দ্বিতীয় অধ্যক্ষ স্বামী শিবানন্দ মন্দিরের ভিত্তিপ্রতিষ্ঠা করেন। তবে, পরে মন্দির গড়ে তুলতে গিয়ে তার স্থান সামান্য পরিবর্তন করার প্রয়োজন হয়। তাই ১৯৩৫ অব্দের গুরুপূর্ণিমাতে সেই তাম্রফলকটি সরিয়ে দ্বিতীয়বার স্থাপন করেন স্বামী বিজ্ঞানানন্দ। পরের বছর ১০ মার্চ থেকে মন্দিরের নির্মাণ কাজ আরম্ভ হয়। ঠিক ছিল যে ১৯৩৭ সালে জগদ্ধাত্রী পুজোর দিন মন্দির প্রতিষ্ঠার কাজ শেষ হবে। কিন্তু গর্ভমন্দিরের কাজ শেষ করতে কিছুটা দেরি হওয়ায় তিনি দুঃখ পেয়ে বলেছিলেন,

‘তোমরা বাপু বড় দেরি কর! স্বামীজি মন্দিরের প্ল্যান করেছিলেন, কিন্তু তাঁর সময়ে মন্দির হয়নি। রাজা মহারাজা চেষ্টা করেও পারেননি। মহাপুরুষ মহারাজ ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেও পারলেন না। সবাই একে একে চলে গেলেন। তাই বলছি, যত শীঘ্র পার তোমরা কাজ শেষ করে নাও, আর দেরি কোরো না।’

বিজ্ঞানানন্দজির কথার তাৎপর্য উপলব্ধি করলেন সকলে। তাই নাটমন্দিরের কাজ সমাপ্তি পর্যন্ত অপেক্ষা না-করেই ১৯৩৮-এর ১৪ জানুয়ারি গর্ভমন্দিরে ঠাকুরের মর্মরবিগ্রহ স্থাপনসহ মন্দির প্রতিষ্ঠার কাজ সমাপনের সঙ্কল্প নেওয়া হল। সেদিন নতুন মন্দিরে আত্মারামের কৌটা স্থাপনের পর স্বামী বিজ্ঞানানন্দ নিজ কক্ষে ফিরে গিয়ে স্বামীজির উদ্দেশে বলেছিলেন,

‘স্বামীজি, আপনি ওপর থেকে দেখবেন বলেছিলেন। আজ দেখুন, আপনারই প্রতিষ্ঠিত ঠাকুর নতুন মন্দিরে বসেছেন।’

বিজ্ঞানানন্দ মহারাজ আরও ‘স্পষ্ট’ দেখতে পেয়েছিলেন যে, স্বামীজি, রাখাল মহারাজ, মহাপুরুষ মহারাজ, শরৎ মহারাজ, হরি মহারাজ, গঙ্গাধর মহারাজ প্রমুখ সকলেই দাঁড়িয়ে আছেন। এর কিছুক্ষণ পরে তিনি স্বস্তির ও তৃপ্তির নিঃশ্বাস ফেলেছিলেন এই বলে যে,

‘এবার আমার কাজ শেষ হল। স্বামীজি আমার ওপর যে কাজের ভার দিয়েছিলেন, সে ভার আজ আমার মাথা থেকে নেমে গেল।’

নাটমন্দির সমেত সমগ্র মন্দিরটি দৈর্ঘ্যে ২৩৫ ফুট আর প্রস্থে ১৪০ ফুট। দ্বিতল গর্ভমন্দিরটি ১১২ ফুট উঁচু। ঠাকুরের দেহাবশেষ যে তাম্রপাত্রে রক্ষিত ছিল সেই আত্মারামের কৌটা এবং ঠাকুরের ধ্যানমূর্তি নতুন মন্দিরের গর্ভগৃহে স্থাপন করা হয়। উচ্চ যোগাবস্থায় স্থিত ঠাকুরের ধ্যানস্থ মূর্তিটির ভাস্কর ছিলেন গোপেশ্বর পাল। ঠাকুরের মূর্তিটি যাতে দূর থেকেও সকলে ভালোভাবে দেখতে পান, সেইরকমভাবেই সেটি ডম্বরু আকৃতির বেদিতে উঁচু করে বসানো হয়েছে। ঠাকুরের জন্মস্থান কামারপুকুরে যুগীদের শিবমন্দিরের আদলে বেদিটি তৈরি। বেদির সামনে ব্রাহ্মীহংসটি উৎকীর্ণ করা হয়েছিল ভারত বিখ্যার শিল্পী নন্দলাল বসুর নির্দেশমতো। নাটমন্দিরের সামনে প্রধান প্রবেশপথের ওপরের দিকে মঠ ও মিশনের প্রতীক স্থাপন করা হয়েছে।

মন্দিরের পেছন দিকে নীচের তলাটি ব্যবহার করা হয় নিত্যপূজার ভাঁড়ার হিসেবে। পূজার সরঞ্জামগুলি রাখা হয় মন্দিরের ভেতরের দেওয়ালে কয়েকটি কুলুঙ্গিতে। এর মধ্যে একটিতে রাখা হয় বাণলিঙ্গ শিব এবং একটিতে থাকে শ্রীমায়ের পবিত্র পদধূলি। আর দোতলার ঘরটি ঠাকুরের শয়নকক্ষ নামে চিহ্নিত হয়েছে। এখানেই সারা বছর সযত্নে রক্ষিত থাকেন আত্মারাম, যা বছরে তিনবার মন্দিরে নামিয়ে এনে মহাস্নান করানো হয়—স্নানযাত্রা, ঠাকুরের জন্মতিথি ও দুর্গাপূজার মহাষ্টমীর দিন। ঠাকুরের ব্যবহৃত স্মারক দ্রব্যগুলি সযত্নে রক্ষিত একতলার ঘরে।

এখানে গর্ভমন্দির ও নাটমন্দির একসঙ্গে যুক্ত, যা সাধারণভাবে হিন্দুমন্দিরে দেখা যায় না, বরং খ্রিস্টীয় রীতিসম্মত। মন্দিরের গম্বুজগুলিতে মসজিদের ছাপ পাওয়া যায়। ছত্রীগুলির ধারে কামারপুকুরে ঠাকুরের বাসগৃহের আদল স্পষ্ট হয়। গম্বুজের স্থাপত্যরীতির সঙ্গে ওড়িশা মন্দিরস্থাপত্যের মিল খুঁজে পাওয়া যায়। নাটমন্দিরের বাঁকানো ছাদ ও বারান্দায় বৌদ্ধ গুহাশিল্পের কথা মনে করিয়ে দেয়। মন্দিরে প্রবেশপথের গোপুরমটি তৈরি করা হয়েছে অজন্তা ও ইলোরার রীতির আদলে। ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ হলেন ‘যত মত তত পথ’ নামক সবচেয়ে উদার ধর্মমতটির প্রবক্তা। বেলুড় মঠের শ্রীরামকৃষ্ণ মন্দিরটিতে সেটিই বাঙ্ময় হয়ে উঠেছে।

আমরা জানি, আমেরিকা, ব্রিটেনসহ সমগ্র পাশ্চাত্যে স্বামীজির কী বিরাট প্রভাব ছিল। রামকৃষ্ণ মঠ প্রতিষ্ঠার সময়েও তাঁদের অনেকে কুণ্ঠাহীনভাবে স্বামীজির পাশে এসে দাঁড়িয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য দু’জন হলেন ইংরেজ কন্যা কুমারী হেনরিয়েটা এফ মিলার এবং আমেরিকান শিষ্যা ওল বুল। বেলুড় মঠের জমি কেনার সময় তাঁরা অকৃপণ হাতে অর্থ সাহায্য দিয়েছিলেন। আর ছিল দেশবাসীরও প্রসারিত হাত। এঁদের সকলের সহযোগিতা ছাড়া আজ রামকৃষ্ণ সঙ্ঘ এই উচ্চতার পৌছঁতে পারত কি না সংশয় রয়ে যায়। অনটনের কারণে স্বয়ং স্বামীজিরও এক সময় অভরসা ধরে গিয়েছিল। কিন্তু শশী মহারাজকে (স্বামী রামকৃষ্ণানন্দ) টলানো যেত না। কিছু অর্থের সংস্থান করার জন্য তিনি সাময়িকভাবে স্থানীয় এক স্কুলে মাস্টারিও করেছিলেন। মঠকে নিয়মিত অর্থ সাহায্য করতেন সুরেশ মিত্র ও বলরাম বসু। তাঁদের মৃত্যুর পরই অনটনটা যেন বেশি টের পাওয়া গিয়েছিল। বিদেশে বক্তৃতা করেও টাকা সংগ্রহের চেষ্টা করতেন স্বামীজি। গুরুভাইদেরও কেউ কেউ তীর্থে তীর্থে বেরিয়ে পড়েছিলেন। রসিদ কেটে চাঁদা আদায়ও চলত। খেতড়ির রাজাও কিছু টাকা দিয়েছিলেন। অর্থ সাহায্য এসেছিল মিস সাউটার, মিস জোসেফিন, মিস্টার স্টার্ডিসহ কিছু পশ্চিমি বন্ধু বা ভক্তদের কাছ থেকে। তবে যেখান থেকে যত টাকাই আসুক না কেন, স্বামীজির নির্দেশ ছিল, নির্দিষ্ট খাতের টাকা অন্যখাতে ব্যয় করা চলবে না।
এইভাবে স্বামীজির নেতৃত্বে রামকৃষ্ণ সঙ্ঘ যখন এগিয়ে চলেছে, তখনই বিনা মেঘে বজ্রাঘাত! ১৯০২ সালের ৪ জুলাই স্বামীজি দেহত্যাগ করলেন। এই ঘোর দুঃসময়েও টলমল তরী যে যথার্থই কূলে ভিড়তে পেরেছিল তার জন্য সবচেয়ে বেশি কৃতিত্ব দিতে হবে সঙ্ঘজননী শ্রীমা এবং তাঁর দুই ভক্ত স্বামী ব্রহ্মানন্দ ও স্বামী সারদানন্দকে।
আরও একটি কথা উল্লেখ করা দরকার। রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশন গোড়াতেই ঘোষণা করেছিল যে, তারা রাজনীতির সংস্রব মুক্ত। তা সত্ত্বেও পরাধীন ভারতের ব্রিটিশ সরকার এই মঠ ও মিশনকে যথেষ্ট সন্দেহের চোখে দেখত। ভাবত, এটা সন্ত্রাসবাদীদের আখড়া। তাদের সম্পর্কে বিরাট এক বিরূপ রিপোর্টও তৈরি করেছিল পুলিস।

প্রখ্যাত বিবেকানন্দ-গবেষক শঙ্করীপ্রসাদ বসু মন্তব্য করেছেন,

‘স্বামীজির কল্পনায় এই মন্দির ভারতবর্ষে শিল্পের নবজাগরণের গর্ভগৃহ।’

কাশীপুরে একটি ভাড়া-করা বাড়িকে লক্ষ্য করে স্বামী বিবেকানন্দ ‘আমাদের প্রথম মঠ’ বলেছিলেন। যে বাড়িতে ঠাকুর তাঁর মর্তলীলা সংবরণ করেছিলেন। রামকৃষ্ণ ভাবান্দোলন এখানে ঠাকুরকে কেন্দ্র করেই দানা বেঁধেছিল। পরে বরাহনগর, আলমবাজার হয়ে তা বেলুড়ে পৌঁছায়। এই পর্বে আন্দোলনটি আবর্তিত হয়েছে বিবেকানন্দ ও তাঁর গুরুভ্রাতাদের মাধ্যমে। ঠাকুরের গৃহীভক্ত সুরেশচন্দ্র মিত্রের আগ্রহে ও পরামর্শে বরাহনগর মঠ স্থাপিত হয়েছিল। অর্থাৎ দক্ষিণেশ্বর তপোবন যদি হয় রামকৃষ্ণ ভাবধারার গোমুখ, তবে বেলুড় হল তার গঙ্গোত্রী। শতাধিক বর্ষকালব্যাপী প্রবাহিত সেই অমৃতধারা বেলুড় মঠের মধ্য দিয়েই মানবমুক্তির পথে এগিয়ে চলেছে।

অকালমৃত্যু ও অকালবার্ধক্যের এই দেশে স্বামী বিবেকানন্দ প্রতিষ্ঠিত রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশন কোন শক্তির বলে এমন কালজয়ী হল, তা একালের ম্যানেজমেন্ট বিশেষজ্ঞদের কাছে রীতিমতো কৌতূহলের বিষয়। অন্যের অর্থ গ্রহণ ও পূর্ণ স্বচ্ছতা বজায় রেখে তা সুষ্ঠুভাবে ব্যয়। এমপাওয়ারমেন্ট বা ক্ষমতাপ্রদানের মাধ্যমে সংগঠনের মধ্যে দায়িত্ববোধ জাগ্রত রাখা। সংগঠনটি আরও দেখিয়ে চলেছে প্যাশন বা আবেগ, মোটিভেশন বা উৎসাহ, কঠোর পরিশ্রম, নির্মোহ হয়ে সবার জন্য উন্নয়ন চিন্তা কতখানি ফলপ্রসূ। বিবেকানন্দের হাতে-গড়া এই সংগঠন দেখিয়ে চলেছে—নিজের মোক্ষ, জগতের মঙ্গল এবং একই সঙ্গে প্রাতিষ্ঠানিক নিয়মের শৃঙ্খলা—তিনটি আপাত বিপরীতধর্মী শক্তির সমন্বয় কীভাবে করা সম্ভব। সব মিলিয়ে সাহিত্যিক শংকরের মনে হয়েছে যে, রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশন হল এক ম্যানেজমেন্ট-বিস্ময়।

ভারত এবং বহির্ভারত মিলিয়ে রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের মোট শাখা আজ ১৮০টি! বেলুড় যার প্রাণকেন্দ্র। ১৯৯৩ সালের ৮ অক্টোবর ইউনেস্কো বিল্ডিংয়ে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও বিদ্বজ্জনদের এক সমাবেশ হয়। সেদিন ইউনেস্কোর ডিরেক্টর জেনারেল ডঃ ফ্রেডেরিকো মেয়রের একটি উক্তি এই প্রসঙ্গে প্রণিধানযোগ্য,

‘১৮৯৭ সালে বিবেকানন্দ যে রামকৃষ্ণ মিশন স্থাপন করেছিলেন তার সংবিধানের সঙ্গে ১৯৪৫ সালে তৈরি ইউনেস্কোর সাদৃশ্য দেখে আমি খুবই বিস্মিত হই। উন্নতির লক্ষ্যে উভয়েরই যে কর্মপ্রচেষ্টা, তার কেন্দ্রে রয়েছে মানুষ।’

Address


Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when OSRP posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Shortcuts

  • Address
  • Alerts
  • Claim ownership or report listing
  • Want your business to be the top-listed Event Planning Service?

Share