সহীহ আকিদার সালাফী ম্যারেজ মিডিয়া-মাসনা,সুলাসা,রুবায়া

  • Home
  • Rajshahi
  • সহীহ আকিদার সালাফী ম্যারেজ মিডিয়া-মাসনা,সুলাসা,রুবায়া

সহীহ আকিদার সালাফী ম্যারেজ মিডিয়া-মাসনা,সুলাসা,রুবায়া বিবাহের ক্ষেত্রে দ্বীনদার পরহেজগার উত্তম চরিত্র পাত্র-পাত্রীকে প্রাধান্য দিন
ইসলামী সমাজ কায়েম করুন

20/02/2024
📌এক  #মহিলা ইমাম নাসিরুদ্দিন আলবানী রহিমাহুল্লাহকে জিজ্ঞেস করেন,ফদ্বীলাতুশ শাইখ, আমি বিয়ের আগে বেশি বেশি নামাজ, রোজা আদা...
16/02/2024

📌এক #মহিলা ইমাম নাসিরুদ্দিন আলবানী রহিমাহুল্লাহকে জিজ্ঞেস করেন,
ফদ্বীলাতুশ শাইখ, আমি বিয়ের আগে বেশি বেশি নামাজ, রোজা আদায় করতাম, কুরআন তিলাওয়াত করে শান্তি অনুভব করতাম, নেক আমলে শান্তি পেতাম কিন্তু এখন আমি সেসব বিষয়ে ঈমানের স্বাদ খুঁজে পাই না..
ইমাম আলবানী রহিমাহুল্লাহ ওই মহিলাকে জিজ্ঞেস করেন, হে আমার মুসলিম বোন তুমি তোমার স্বামীর হক আদায় করা এবং তাঁর কথা শোনার ব্যাপারে কতটুকু মনোযোগী?
মহিলা একটু বিরক্তবোধ করে বলে, শাইখ আমি আপনাকে নামাজ, রোজা, কুরআন তিলাওয়াত আর আল্লাহর আনুগত্যের কথা জিজ্ঞেস করছি আর আপনি আমাকে আমার স্বামীর ব্যাপারে বলছেন!
শাইখ আলবানী রহিমাহুল্লাহ বলেন, আমার বোন, অধিকাংশ মেয়ে এই কারণে ঈমানের স্বাদ, আল্লাহর আনুগত্যে, ইবাদতে তৃপ্ততা পায় না।
কেননা- রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, কোন মহিলা ঐ সময় অবধি ঈমানের স্বাদ বা তৃপ্ততা পাবে না; যতক্ষণ পর্যন্ত নিজের স্বামীর হক্ব আদায় করবে। [সহীহ আত তারগীব, ১৯৩৯]


 #বিশ্ব_ভালবাসা_দিবস ! ×××এক নোংরা ও জঘন্য ইতিহাসের স্মৃতিচারণের নাম বিশ্ব ভালবাসা দিবস। এ ইতিহাসটির বয়স সতের শত সাঁইত্...
14/02/2024

#বিশ্ব_ভালবাসা_দিবস ! ×××

এক নোংরা ও জঘন্য ইতিহাসের স্মৃতিচারণের নাম বিশ্ব ভালবাসা দিবস। এ ইতিহাসটির বয়স সতের শত সাঁইত্রিশ বছর হলেও ‘বিশ্ব ভালবাসা দিবস’ নামে এর চর্চা শুরু হয় সাম্প্রতিক কালেই। দুই শত সত্তর সালের চৌদ্দই ফেব্রুয়ারির কথা। তখন রোমের সম্রাট ছিলেন ক্লডিয়াস। সে সময় ভ্যালেন্টাইন নামে একজন সাধু, তরুণ প্রেমিকদেরকে গোপন পরিণয়-মন্ত্রে দীক্ষা দিত। এ অপরাধে সম্রাট ক্লডিয়াস সাধু ভ্যালেন্টাইনের শিরশ্ছেদ করেন। তার এ ভ্যালেন্টাইন নাম থেকেই এ দিনটির নাম করণ করা হয় ‘ভ্যালেন্টাইন ডে’ যা আজকের ‘বিশ্ব ভালবাসা দিবস’।

বাংলাদেশে বিশ্ব ভালবাসা দিবস পালন শুরু হয় যেভাবে:

বাংলাদেশে এ দিবসটি পালন করা শুরু হয় ১৯৯৩ইং সালে। কিছু ব্যবসায়ীর মদদে এটি প্রথম চালু হয়। অপরিণামদর্শী মিডিয়া কর্মীরা এর ব্যাপক কভারেজ দেয়। আর যায় কোথায় ! লুফে নেয় বাংলার তরুণ-তরুণীরা। এরপর থেকে ঈমানের ঘরে ভালবাসার পরিবর্তে ভুলের বাসা বেঁধে দেয়ার কাজটা যথারীতি চলছে। আর এর ঠিক পিছনেই মানব জাতির আজন্ম শত্রু শয়তান এইডস নামক মরণ-পেয়ালা হাতে নিয়ে দাঁত বের করে হাসছে। মানুষ যখন বিশ্ব ভালবাসা দিবস সম্পর্কে জানত না, তখন পৃথিবীতে ভালবাসার অভাব ছিলনা। আজ পৃথিবীতে ভালবাসার বড় অভাব। তাই দিবস পালন করে ভালবাসার কথা স্মরণ করিয়ে দিতে হয়! আর হবেই না কেন! অপবিত্রতা নোংরামি আর শঠতার মাঝে তো আর ভালবাসা নামক ভালো বস্তু থাকতে পারে না। তাই আল্লাহ তা‘আলা মানুষের হৃদয় থেকে ভালবাসা উঠিয়ে নিয়েছেন।

তথাকথিত এই দিনের কিছু বাজে চিত্র:

বিশ্ব ভালবাসা দিবসকে চেনার জন্য আরও কিছু বাস্তব নমুনা পেশ করা দরকার। দিনটি যখন আসে তখন শিক্ষাঙ্গনের শিক্ষার্থীরা বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তো একেবারে বেসামাল হয়ে উঠে। নিজেদের রূপ-সৌন্দর্য উজাড় করে প্রদর্শনের জন্য রাস্তায় নেমে আসে। শুধুই কি তাই ! অঙ্কন পটীয়সীরা উল্কি আঁকার জন্য পসরা সাজিয়ে বসে থাকে রাস্তার ধারে। তাদের সামনে তরুণীরা পিঠ, বাহু আর হস্তদ্বয় মেলে ধরে পছন্দের উল্কিটি এঁকে দেয়ার জন্য। তারপর রাত পর্যন্ত নীরবে-নিবৃতে প্রেমিক বা প্রেমিকার সাথে খোশ গল্প। এ হলো বিশ্ব ভালবাসা দিবসের কর্মসূচি! এরকম একটি দিবসকে 'বিশ্ব ভালবাসা দিবস' না বলে 'বিশ্ব বেহায়াপনা দিবস' বললে অন্তত: নামকরণটির যথার্থতা কিছুটা প্রমান হতো।

বিশ্ব ভালবাসা দিবস পালনের ক্ষতিকর কিছু দিক:

১. এটি অন্য ধর্মের একটি বিজাতীয় সংস্কৃতি। অন্য জাতি গোষ্ঠীর অনুসরন অনুকরন করা থেকে মুসলমানদের নিরুৎসাহিত করেছেন। এর উদ্দেশ্যও পরিষ্কার। মুসলমানদের স্বাতন্ত্র্য ভিন্নতা ও জাতিগত আলাদা ঐতিহ্য যাতে পৃথিবীতে গড়ে ওঠে এর জন্যই ছিল এ সতর্কতা। বিভিন্ন হাদিসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম কর্তৃক বর্নিত নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি অতিব অনুধাবনযোগ্য। এক হাদিসে তিনি বলেন, মান তাশাব্বাহা বিকওমিন ফাহুঅ মিনহুম। অর্থ- যিনি যে জাতির সাদৃশ্য গ্রহন করবেন তিনি সে জাতির ভেতরে গন্য হবেন।
২. ভালবাসা নামের এ শব্দটির সাথে এক চরিত্রহীন লম্পটের স্মৃতি জড়িয়ে যারা ভালবাসার জয়গান গেয়ে চলেছেন, পৃথিবীবাসীকে তারা সোনার পেয়ালায় করে নীল বিষ পান করিয়ে বেড়াচ্ছেন।
৩. তরুণ-তরুণীদের সস্তা যৌন আবেগকে সুড়সুড়ি দিয়ে সমাজে বিশৃঙ্খলা ও ফাসাদ সৃষ্টি করা হচ্ছে। অথচ আল্লাহ তা‘আলা ফাসাদ সৃষ্টিকারীদের ভালবাসেন না। আল্লাহ তা‘আলার ঘোষনা,
‘‘আর তারা তো পৃথিবীতে ফাসাদ সৃষ্টি করে বেড়ায়। আর আল্লাহ ফাসাদ সৃষ্টিকারীদের ভালবাসেন না।’’(সূরা আল মায়িদাহ : ৬৪)
৪. নৈতিক অবক্ষয় দাবানলের মত ছড়িয়ে যাচ্ছে।
৫. নির্লজ্জতা ও বেহায়াপনা জাতীয়ভাবে স্বীকৃতি লাভ করছে। যারা ঈমানদারদের সমাজে এ ধরণের অশ্লীলতার বিস্তার ঘটায়, দুনিয়া ও আখিরাতে তাদের জন্য আল্লাহ তা‘আলা যন্ত্রণাদায়ক শাস্তির ব্যবস্থা করে রেখেছেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
‘‘ যারা মু’মিনদের মধ্যে অশ্লীলতার প্রসার কামনা করে তাদের জন্য আছে দুনিয়া ও আখিরাতে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি..।’’(সূরা আন-নূর :১৯)
বস্তুত যে সমাজেই চরিত্র-হীনতার কাজ ব্যাপক, তথায় আল্লাহর নিকট থেকে কঠিন আযাবসমূহ ক্রমাগত অবতীর্ণ হওয়া অবধারিত। আব্দুল্লাহ ইবন ‘উমর রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু থেকে বর্ণিত। রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
‘‘যে জনগোষ্ঠীর মধ্যে নির্লজ্জতা প্রকাশমান, পরে তারা তারই ব্যাপক প্রচারেরও ব্যবস্থা করে, যার অনিবার্য পরিণতি স্বরূপ মহামারি, সংক্রামক রোগ এবং ক্ষুধা-দুর্ভিক্ষ এত প্রকট হয়ে দেখা দিবে, যা তাদের পূর্ববর্তীদের মধ্যে কখনই দেখা যায় নি।’’(ইবনু মাজাহ, কিতাবুল ফিতান, হাদিস নং-৪০০৯)
৬. তরুণ-তরুণীরা বিবাহ পূর্ব দৈহিক সম্পর্ক গড়তে কোন রকম কুণ্ঠাবোধ করছে না। অথচ তরুণ ইউসুফ আলাইহিস সালামকে যখন মিশরের এক রানী অভিসারে ডেকেছিল, তখন তিনি কারাবরণকেই এহেন অপকর্মের চেয়ে উত্তম জ্ঞান করেছিলেন। রোমান্টিক অথচ যুব-চরিত্রকে পবিত্র রাখার জন্য কী অতুলনীয় দৃষ্টান্ত! আল্লাহ জাল্লা শানুহু সূরা ইউসুফের ২৩-৩৪ নম্বর আয়াত পর্যন্ত এ ঘটনা বর্ণনা করেছেন এভাবে-
‘‘সে যে স্ত্রীলোকের ঘরে ছিল সে তার কাছ থেকে অসৎকাজ কামনা করল ও দরজাগুলো বন্ধ করে দিল এবং বলল, ‘আস।’ সে বলল, ‘আমি আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করছি, তিনি আমার প্রভু; তিনি আমার থাকার সুন্দর ব্যবস্থা করেছেন। নিশ্চয়ই সীমালঙ্ঘনকারীরা সফলকাম হয় না। সে রমণী তো তার প্রতি আসক্ত হয়েছিল এবং সেও তার প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ত যদি না সে তার প্রতিপালকের নিদর্শন দেখতে পেত। আমি তাকে মন্দ-কাজ ও অশ্লীলতা হতে বিরত রাখার জন্য এভাবে নিদর্শন দেখিয়েছিলাম। সে তো ছিল আমার বিশুদ্ধচিত্ত বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত। ওরা উভয়ে দৌড়ে দরজার দিকে গেল এবং স্ত্রীলোকটি পিছন হতে তার জামা ছিঁড়ে ফেলল, তারা স্ত্রীলোকটির স্বামীকে দরজার কাছে পেল। স্ত্রীলোকটি বলল, ‘যে তোমার পরিবারের সাথে কুকর্ম কামনা করে তার জন্য কারাগারে প্রেরণ বা অন্য কোন মর্মন্তুদ শাস্তি ছাড়া আর কি দণ্ড হতে পারে? ইউসুফ বলল, ‘সে-ই আমার কাছ থেকে অসৎকাজ কামনা করছিল।’ স্ত্রীলোকটির পরিবারের একজন সাক্ষী সাক্ষ্য দিল, ‘যদি তার জামার সামনের দিক থেকে ছিঁড়ে থাকে তবে স্ত্রীলোকটি সত্য কথা বলেছে এবং পুরুষটি মিথ্যাবাদী, কিন্তু তার জামা যদি পিছন দিক থেকে ছিঁড়ে থাকে তবে স্ত্রীলোকটি মিথ্যা বলেছে এবং পুরুষটি সত্যবাদী। গৃহস্বামী যখন দেখল যে, তার জামা পিছন দিক থেকে ছেঁড়া হয়েছে তখন সে বলল, ‘নিশ্চয়ই এটা তোমাদের নারীদের ছলনা, তোমাদের ছলনা তো ভীষণ। হে ইউসুফ! তুমি এটা এড়িয়ে যাও এবং হে নারী! তুমি তোমার অপরাধের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা কর; তুমিই তো অপরাধী। নগরের কিছু সংখ্যক নারী বলল, ‘আযীযের স্ত্রী তার যুবক দাস হতে অসৎকাজ কামনা করছে, প্রেম তাকে উন্মত্ত করেছে, আমরা তো তাকে স্পষ্ট ভুলের মধ্যে দেখছি। স্ত্রীলোকটি যখন ওদের কানা-ঘুষার কথা শুনল, তখন সে ওদেরকে ডেকে পাঠাল, ওদের জন্য আসন প্রস্তুত করল, ওদের সবাইকে একটি করে ছুরি দিল এবং ইউসুফকে বলল, ‘ওদের সামনে বের হও।’ তারপর ওরা যখন তাঁকে দেখল তখন ওরা তাঁর সৌন্দর্যে অভিভূত হল এবং নিজেদের হাত কেটে ফেলল। ওরা বলল, ‘অদ্ভুত আল্লাহর মাহাত্ম্য! এ তো মানুষ নয়, এ তো এক মহিমান্বিত ফেরেশতা। সে বলল, ‘এ-ই সে যার সম্বন্ধে তোমরা আমার নিন্দা করেছ। আমি তো তার থেকে অসৎকাজ কামনা করেছি। কিন্তু সে নিজেকে পবিত্র রেখেছে; আমি তাকে যা আদেশ করেছি সে যদি তা না করে, তবে সে কারারুদ্ধ হবেই এবং হীনদের অন্তর্ভুক্ত হবে। ইউসুফ বলল, ‘হে আমার প্রতিপালক! এ নারীরা আমাকে যার দিকে ডাকছে তার চেয়ে কারাগার আমার কাছে বেশী প্রিয়। আপনি যদি ওদের ছলনা হতে আমাকে রক্ষা না করেন তবে আমি ওদের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়ব এবং অজ্ঞদের অন্তর্ভুক্ত হব। তারপর তার প্রতিপালক তার ডাকে সাড়া দিলেন এবং তাকে ওদের ছলনা হতে রক্ষা করলেন। তিনি তো সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।(অনুবাদ, সূরা ইউসুফ : ২৩-৩৪)
৭. শরীরে উল্কি আঁকাতে যেয়ে নিজের ইজ্জত-আব্রু পরপুরুষকে দেখানো হয়। যা প্রকাশ্য কবিরা গুনাহ। যে ব্যক্তি উল্কি আঁকে এবং যার গায়ে তা আঁকা হয়, উভয়য়ের উপরই আল্লাহর লা‘নত বর্ষিত হয়। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেন,
‘‘যে ব্যক্তি পর-চুলা লাগায় এবং যাকে লাগায়; এবং যে ব্যক্তি উল্কি আঁকে এবং যার গায়ে আঁকে, আল্লাহ তাদেরকে অভিসম্পাত করেন।’’ (বুখারী,কিতাবুল লিবাস,হাদিস নং৫৪৭৭)
মূলত যার লজ্জা নেই, তার পক্ষে এহেন কাজ নেই যা করা সম্ভব নয়। তাই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
‘‘যদি তোমার লজ্জা না থাকে তাহলে যা ইচ্ছা তাই করতে পার।’’(বুখারী, কিতাবু আহাদীসিল আম্বিয়া, হাদিস নং৩২২৫)
৮. ভালবাসা দিবসের নামে নির্লজ্জতা বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে যিনা-ব্যভিচার, ধর্ষণ ও খুন ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। আব্দুল্লাহ ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
‘‘যে জনগোষ্ঠীর-মধ্যেই ব্যভিচার ব্যাপক হবে, তথায় মৃত্যুর আধিক্য ব্যাপক হয়ে দেখা দেবে।’’ (মুয়াত্তা মালিক, কিতাবুল জিহাদ, হাদিস নং-৮৭০)

পরিশেষে বলতে চাই:
অতএব দীন এবং ঈমান প্রিয় আখেরাতের অন্তহীন জীবনে বিশ্বাসী সুপ্রিয় মুমিন-মুসলিম ভাই-বোনেরা! ভালবাসা কোন পর্বীয় বিষয় নয়। এটি মানব জীবনের সুখ-শান্তির জন্য একটি জরুরি সার্বক্ষণিক মানবিক উপাদান। সুতরাং আমাদের মধ্যে ভালবাসা ও সৌহার্দ বৃদ্ধির জন্য রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর শিখানো সার্বক্ষণিক পন্থাটি অবলম্বন করতে সচেষ্ট হই। আল্লাহ পাক তাওফীক দান করুন। সেই সাথে 'বিশ্ব ভালবাসা দিবস' -এর নামে প্রচলিত ঈমান বিধ্বংসী কর্মকাণ্ড হতে আল্লাহ তা‘আলা আমাদেরকে হেফাযত করুন। কারও প্রতি আমাদের ভালবাসা কিংবা কারও সাথে শত্রুতা- সব কিছুর মূলেই যেন উদ্দেশ্য থাকে শুধুমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন। আমীন !!!

09/12/2023

#আলেম কমানোর ঘোষণা এবং একজন #নায়িকার উপলব্ধি
বিজ্ঞানময় আবিস্কার মানবজাতিকে যেসব নিত্যসৃষ্টে বাধিত ও ব্যাকুল করেছে সেগুলোর অন্যতম হচ্ছে বিনোদন সংস্কার। বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রার হাত ধরাধরি করে সিনেমা-থিয়েটার মানুষের বিনোদন জগতকে মাতিয়ে রেখেছে উন্মাতাল আবেগপ্রবণতায়। বাস্তবজীবনে ব্যর্থ কিংবা হতাশাক্লিষ্ট দর্শক সিনেমা-থিয়েটারে খুঁজে পায় শিহরিত বিনোদন ও উত্তেজক আনন্দ। কারণ বাস্তবজীবনে যা আদৌ সম্ভব নয় তাই দেখানো হয় এসব জায়গায়। একমাত্র সিনেমা-থিয়েটার আর নাটক-নোবেলেই সম্ভব অবাস্তব কাহিনীর অবতারণা। কারণ এখানে সত্যিকারের জীবন্ত মানুষের মুখোমুখি হওয়ার দায় নেই।

এখানে দৃশ্যত নারী-পুরুষদের কোনো অসম্ভব আচরণ বা অস্বাভাবিক উক্তি করা ও কিছু করে দেখানোতে বাধা নেই। তাই বাস্তব জীবনে যা একেবারেই অসম্ভব কিংবা কল্পনাতেও যা আসে না, নাটক-সিনেমায় সেগুলো দেখে দর্শকরা ‘ওয়াও’ আর ‘এঙ্কোর এঙ্কোর’ বলে চেঁচিয়ে ওঠে! দর্শকরা জানে না, সিনেমায় যে প্রণয়নিবেদন কিংবা অবিশ্বাস্য দৃশ্য প্রদর্শিত হয় অথবা ভিলেন কর্তৃক মায়ের কাছ থেকে সন্তান কেড়ে নেয়ার যে উত্তেজক দৃশ্য দেখে তারা ব্যথিত হয় তার ষোলো আনাই মিছে, ষোলো আনাই স্টেজ-ম্যানেজড্! ষোলো আনাই ফান ও ফাঁকি! কিন্তু হতভাগ্য দর্শকের এসব জানার উপায় নেই। রচিত কাব্যের বর্হিদেশে, অভিনীত নাটকের নেপথ্যে গল্পের বাস্তবতা চিরকাল থাকে লোকলোচনের অন্তরালে। তাই নাটকের যেখানে শেষ জীবনের সেখানেই শুরু!

কিন্তু তবু কথা থেকে যায়। রচিত কাব্য ও কল্পিত নাটকই কখনও কখনও মানুষের জীবনে চরম সত্য হয়ে ধরা দেয়। সেই সত্য গল্প কাহিনীর গল্পের চেয়েও নির্মম, অভিনীত নাটকের চেয়েও অবিশ্বাস্য হয়ে আত্মপ্রকাশ করে! সেই অবিশ্বাস্য একটা গল্পই আজ আপনাকে শোনাতে চাই।

প্রেক্ষাগৃহের উত্তাপ কখনও কখনও বাইরেও আঘাত হানে। শ্রুতিগর্জন করে এই জগতের বাইরের লোকদের কানেও। চেপে ধরার পর অনিচ্ছাসত্ত্বেও অন্যের ঘাম নাকে প্রবিষ্ট হওয়ার মতো কানে পড়ে অনেক অনাকাঙ্ক্ষিত তথ্য। হাদীসের ভাষ্যানুযায়ী ‘সুদের ধোঁয়া সব মানুষকে আচ্ছন্ন করা’র মতোই।

কল্পনার জগতকে কেন্দ্র করে বাস্তবজীবন রচিত হয় না। ঠিক তদ্রূপ কেউই প্রেক্ষাগৃহে প্রদর্শিত কোনো অভিনয় কিংবা অবাস্তব জীবনের মহড়া বাস্তবজীবনে প্রতিফলিত করে না কিংবা সে অনুযায়ী সংসারও পাতে না। তাই প্রযোজকরা বাস্তবজীবনকে অবলম্বন করেই অবাস্তব ঘটনার অবতারণা ঘটান। সেই অবাস্তব অবতারণায় একজন পুরুষের (নায়কের) পাশে সার্বক্ষণিক থেকে ছবিকে রঙে-ঢঙে ফুটিয়ে তুলতে একজন নায়িকার প্রয়োজন হয়।

নব্বই দশকে ‘সোহরাব-রুস্তম’ নামের একটা ছবি নাকি খুব আলোড়ন তুলেছিল। আর সেই ছবিতে ইলিয়াস কাঞ্চনের পাশে একজন নায়িকা ছিলেন। নাম তার বনশ্রী (মূল নাম শাহিনা আখতার)। মুক্তি-পরবর্তী ছবিটি ব্যাপক ব্যবসা সফলও হয়েছিল। অজপাড়া গাঁ থেকে উঠে আসা একটা সরল মেয়ে এই ছবির নায়িকা বনশ্রীও রাতারাতি তারকা বনে গিয়েছিলেন। তাই দামি গাড়িতে ভ্রমণ, বিলাসবহুল ফ্ল্যাটে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষেই কেটেছে বনশ্রীর সেই তারকাখ্যাতির দিনগুলো। বললে বিশ্বাস হবে! সেই তারকা নায়িকা বনশ্রী আজ ঢাকার রাজপথের ফুটপাতে হেঁটে হেঁটে এবং বাসযাত্রীদের কাছে নামাজ শিক্ষার বই বিক্রি করেই দিন যাপন করছেন!

একসময়ের বিতর্কিত প্রযোজক ফারুক ঠাকুর এই বনশ্রীকে নিয়ে নির্মাণ করেছিলেন ‘সোহরাব-রুস্তম’ ছবিটি। তখন বনশ্রী ফারুক ঠাকুরের বিবাহিত স্ত্রী ছিলেন বলেও গুঞ্জন ছিল। অথচ বনশ্রী ছিলেন অন্যজনের ঘরণী। তিনি শ্যামল দাস নামের এক হিন্দু স্যারের কাছে প্রাইভেট পড়তেন। সেই স্যার বনশ্রীর রূপে মুগ্ধ হয়ে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। বনশ্রীর পরিবার থেকে সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যাত হলে তিনি নিজের গায়ে আগুন ধরিয়ে দেন। পরে স্বধর্ম ত্যাগ করে তিনি বনশ্রীকে বিয়ে করতে সক্ষম হন। কিন্তু বিয়ের কিছুদিনের মধ্যে মোহ কেটে যায়। যিনি তাকে বিয়ে করার জন্য গায়ে আগুন ধরিয়ে দিয়েছিলেন সেই তিনিই তাকে ছাড়ার ফন্দি করতে থাকেন।

এরপর বনশ্রী নেমেছিলেন শোবিজের কণ্টকাকীর্ণ পথে। যার মাধ্যমে সিনেমা জগতে এসেছিলেন তাকে কড়া শর্ত দিয়েছিলেন পার্শ্বনায়িকা নয়- মূল নায়িকার চরিত্রে অভিনয় করবেন তিনি। শুধু তাই নয়, যেনতেন নায়কের সঙ্গে অভিনয় নয়, তখনকার যিনি হিট তার সঙ্গে অভিনয় করবেন। না জানি কী এক জাদু ছিল বনশ্রীর কথায়, আচরণে কিংবা সৌন্দর্যে। যার ফলে সিনেমা জগতের জন্য এই অবাস্তব শর্তও তৎকালীন পরিচালক ফারুক ঠাকুর সহজেই মেনে নিয়েছিলেন এবং প্রথমদিন থেকেই চেয়েছিলেন বনশ্রীকে এদেশের প্রথম সারির একজন নায়িকা বানাবার। এজন্য তিনি একেবারে অনভিজ্ঞ, অপরিচিত ও গ্রাম্য মেয়েটির জন্য ছবিতে বিনিয়োগও করেছিলেন প্রচুর। এরপর ঘটেছিল অনেক কিছু। কিন্তু যেহেতু বনশ্রী আজ ঘরে ফেরার পথে আছেন, নিজ সন্তানকে গড়ে তুলতে চাচ্ছেন একজন ভালো মানুষ হিসেবে তাই সেই অবাঞ্ছিত ইতিহাস উল্লেখ না করাই ভালো।

পত্রিকার খবর, সোহরাব-রুস্তমের পর বনশ্রী অভিনীত ‘নিষ্ঠুর দুনিয়া’ ও ‘ভাগ্যের পরিহাস’ নামের দুটি ছবির কাজও শুরু হয়েছিল। আমি বলেছিলাম, ছবি ও নাটকের কল্পিত ঘটনা ও আখ্যানই কখনও কখনও মানুষের বাস্তবজীবনের আঙিনায় তীব্রবেগে আছড়ে পড়ে। বনশ্রীর বেলায়ও তাই ঘটল। ছবির সেই কল্পিত ভাগ্যের নির্মম পরিহাস বনশ্রীর বাস্তবজীবনে আঘাত হানল। সেই আঘাতে জর্জরিত ঘরছাড়া, অর্থহারা, সন্তানহারা বনশ্রী আজ তিন বছরের শিশু সন্তানকে নিয়ে হকারি করে দিনযাপন করছেন! কিছুদিন আগে খবর বেরুলো, শাহবাগে তিনি ফুল বিক্রি করছেন!

ঘটনার সারাংশ হচ্ছে, ফারুক ঠাকুর নিজ বলয়ের বাইরে কারও ছবিতে কাজ করতে দিতেন না বনশ্রীকে। এ নিয়ে বনশ্রীর মনে ক্ষোভ থাকলেও ফারুক ঠাকুরের ভয়ে মুখ ফুটে কিছু বলেননি। বনশ্রী থাকতেন মোহাম্মদপুরের একটি আলিশান বাড়িতে। বিলাসিতারও কোনো কমতি ছিল না। এত সুখ হয়তো তার কপালে সয়নি। একটি দুর্ঘটনা সবকিছু বদলে দেয়। গুলশান এলাকার একটি জমি নিয়ে কিছু লোকের সঙ্গে ফারুক ঠাকুরের বিরোধ ছিল। একদিন প্রতিপক্ষের সঙ্গে বাক-বিতণ্ডার একপর্যায়ে ফারুক ঠাকুরের ছোঁড়া গুলিতে প্রতিপক্ষের এক লোক ঘটনাস্থলেই মারা যায়। এ ঘটনার পর ফারুক ঠাকুর লোকচক্ষুর অন্তরালে চলে যায়। সেই থেকে আজ পর্যন্ত তিনি আর প্রকাশ্যে আসেননি। একা হয়ে যায় বনশ্রী। ফারুক ঠাকুর তাকে ঢাকার নামীদামী এলাকায় একটি বাড়িও করে দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু বনশ্রীর বাবা তাতে অনীহা প্রকাশ করায় তা আর করা হয়নি। ফলে বনশ্রীর জীবনযুদ্ধ আরো কঠিন হয়ে ওঠে।

তারপর থেকেই শুরু হয় বনশ্রীর জীবনযুদ্ধ। ফারুক ঠাকুরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে বনশ্রীকে নিয়ে আর কেউ ছবি বানাতে আগ্রহী হয়নি। দিন দিন তার অবস্থার অবনতি হতে থাকে। প্রথম স্বামী যে আবেগে স্বধর্ম ত্যাগ করে তাকে বিয়ে করেছিলেন সেই আবেগের বশবর্তী হয়ে খুব দ্রুতই বিবাহবিচ্ছেদ ঘটিয়েছিলেন। এরপর আশ্রয় হয়ে ওঠা ফারুক ঠাকুরও খুনের ঘটনায় হারিয়ে গেলেন। ফারুকের এই ঘটনার সময়ও প্রচুর অর্থবিত্ত ছিল তার। কিন্তু সবকিছুতেই যেন পতন শুরু হয়। চতুর্দিক থেকে লোক জড়ো হতে থাকে তার টাকাগুলো মেরে দেয়ার জন্য। আত্মীয়-স্বজন থেকে শুরু করে বিভিন্ন ব্যক্তি কেউ ব্যবসা করে দেয়ার নামে। কেউ অল্পদিনের জন্য ঋণ নেয়ার নামে প্রায় কোটি টাকার ব্যাংক-ব্যালেন্স অল্পদিনের মধ্যেই নিঃশেষ করে দেয়। বনশ্রী এরপর ধানমণ্ডিতে একটি বিউটিপার্লার করেন। সে ব্যবসাও তিনি বেশিদিন টিকিয়ে রাখতে পারেননি।

নিজেকে টিকিয়ে রাখতে নিজের চেয়েও কমবয়সী এক ছেলের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন তিনি। বাড্ডার বসতিতে নতুন স্বামী নিয়ে সংসার শুরু করেন। পালছেঁড়া জীবনতরীর দুর্বল মাঝি হলেও এই স্বামী তার জীবনকে টেনে নিয়ে যাচ্ছিলেন সামনের দিকে। কিন্তু একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দিয়ে সেই মানুষটিও বনশ্রীকে নিঃসঙ্গ করে পরপারের যাত্রাপথে রওয়ানা হন।

বনশ্রী খুবই বিলাসী, অলংকারপ্রিয় ও সৌন্দর্যসচেতন ছিলেন। জড়োয়া গহনা এবং মোটা ও পুরু অলঙ্কার ছাড়া কখনও এফডিসি মাড়াতেন না। অভিনয়ের সময়েও শরীরে জড়ানো থাকত মূল্যবান অলঙ্কার। যে কয়জন লোকের মূল্যবান গাড়িতে সে সময়ের রাজধানীর পিচঢালা পথ প্রকম্পিত হতো, তিনি ছিলেন তাদেরই একজন। কিন্তু পর্যায়ক্রমে গাড়িও পরিবর্তন হয়েছে, গাড়িতে ওঠার উদ্দেশ্যও পরিবর্তন হয়েছে। জীবনতরীর পাল, মাস্তুল, মাঝি-মাল্লা সবই বিধ্বস্ত হয়েছে। জীবন থেকে সরে গেছে একে একে সব অবলম্বন।

সর্বশেষ যে ঝড় তার জীবনের শেষ অবলম্বন নিশ্চিহ্ন করে দেয় তার ধকল সহ্য করা তার পক্ষে অসম্ভব হয়ে পড়ে। প্রথম ঘরের অষ্টম শ্রেণির মেয়েটিকে তার পরিচিত লোকেরা হাইজাক করে। তিনি মেয়ের শূন্যতায় উদ্ভ্রান্ত হয়ে যান। ছুটতে থাকেন থানায় থানায়। বিচার চান এই অমানবিক অন্যায়-অপরাধের। কিন্তু সবাই তাকে নিরাশ করে। নিবৃত করেন নিজকন্যার দাবি থেকে! এ কোন দুঃসহ সমাজে বাস করছি আমরা? একজন হতভাগা মা তার কন্যা অপহরণের বিচার নিয়ে সুনির্দিষ্টভাবে অপরাধীকে চিহ্নিত করার পরও আইন তার সহায়তা না করে অপরাধীর সহায়তা করে!

বনশ্রী অনেক কাকুতি-মিনতি করেন হাইজাকারদের কাছে একমাত্র অবলম্বন নিজের বুকে ফিরিয়ে দেয়ার। কিন্তু হৃদয় গলে না পাষণ্ডদের। তারা তাকে বিক্রি করে দেয় খারাপ জায়গায়। বুকটা ফেটে যায় বনশ্রীর। নিজকন্যার এই পরিণতি তিনি কিছুতেই বরদাশত করতে পারেন না। একরাশ বেদনা, হতাশা ও জীবনধারনের শেষ অবলম্বন হারিয়ে তিনি রাস্তায় নামেন। পরের ঘরের মাত্র তিন বছরের শিশু সন্তান নিয়ে সিনেমার মতোই অবিশ্বাস্য ঘটনার জন্ম দিয়ে আজ ফুটপাতে বই বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহের চেষ্টা করছেন বনশ্রী। জীবিকার প্রশ্নে আশ্রয় নিয়েছেন এমন এক অবলম্বন, যা মুসলিমদের হৃদয়কে আন্দোলিত করে। তিনি বাসে বাসে নামাজ শিক্ষার বই বিক্রি করতে থাকেন। অনেকে তার পরিচয় পেয়ে হতবিহ্বল হন। নামাজ শিক্ষার বইয়ের কারণে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন।

এভাবেই চলছে একজন খ্যাতিমান তারকার দুঃখের জীবন। যাদের নিয়ে গড়ে তুলেছিলেন নাটক-সিনেমার রঙিন জগত তারা উল্কাবেগে তার কাছ থেকে দূরে সরে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। যার সঙ্গে অভিনয় করেছিলেন, তেমন এক নায়কের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে বহুদিন আগের পথ-পরিচয়ের কোনো অস্পষ্ট স্মৃতি যেমন কেউ খুব কষ্ট করে মনে করে, ঠিক তেমনি তিনি বললেন, হ্যাঁ, মনে পড়েছে। এই নামের একজন নায়িকার সঙ্গে অভিনয় করেছিলাম! সত্যিই স্যালুকাস! এই জীবনে না আছে দায়, না আছে হৃদয়। কেবলই অভিনয়, প্রবঞ্চনা আর শঠতা। এই শঠতা দিয়েই ধ্বংস করা হচ্ছে হাজার তরুণ-যুবকের জীবন। হতভাগ্য যুবক তা বোঝে জীবনসায়াহ্নে, জীবনভেলা ভাঙাতীরে ভেড়ার পর!

সবচেয়ে অবাক ব্যাপার হচ্ছে, বনশ্রী এই সমাজব্যবস্থা, মানুষের সীমাহীন লৌকিকতা ও পাষণ্ডতার প্রতি তীব্র বীতশ্রদ্ধ হয়ে উঠেছেন। তথাকথিত শিক্ষাব্যবস্থার প্রতি তিনি চরম আস্থাহীন হয়ে পড়েছেন। তাই সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘আমি আমার ছেলেকে আলেম বানাবো। সারাবিশ্বের মানুষকে সে আল্লাহ তা‘আলার দিকে ডাকবে। আমি নায়ক বানাবো না। কেননা, নায়ক হলে মদ খাবে, আমাকে ভালোবাসবে না।’

এটাই কুদরতের খেলা! কিছুদিন আগে এক রাজনীতিক বাংলাদেশের আলেম-ওলামা ও মাদরাসার ছাত্র সংখ্যা কমানোর ঘোষণা দিয়েছেন। কী স্পর্ধা! আল্লাহ তা‘আলা যাদের মাধ্যমে কেয়ামত পর্যন্ত দীন জিন্দা রাখবেন, কুরআন-হাদীসের আলো ও নূর যাদের দ্বারা প্রজ্জ্বলিত রাখবেন তাদের সংখ্যা কমানো মানে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা? নাকি স্বয়ং আল্লাহ তা‘আলার সঙ্গে যুদ্ধ ঘোষণা! আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বর্ণিত হাদীসে কুদসীতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আল্লাহ তা‘আলা ইরশাদ করেন,

«مَنْ عَادَى لِي وَلِيًّا فَقَدْ آذَنْتُهُ بِالحَرْبِ»

‘যে ব্যক্তি আমার কোনো ওলী বা প্রিয় কারও সঙ্গে শত্রুতা পোষণ করে, আমি তার বিরুদ্ধে আমি যুদ্ধের ঘোষণা দেই।’ [বুখারী : ৬৫০২]

কুরআন ও কুরআনী শিক্ষার বিরুদ্ধে কোনো উদ্যোগ সফল হবে না ইনশাআল্লাহ। যারা এর অপপ্রয়াস চালাবে তারাই ধ্বংস হয়ে যাবে। আল্লাহর ঘোষণা :

﴿ يُرِيدُونَ أَن يُطۡفِ‍ُٔواْ نُورَ ٱللَّهِ بِأَفۡوَٰهِهِمۡ وَيَأۡبَى ٱللَّهُ إِلَّآ أَن يُتِمَّ نُورَهُۥ وَلَوۡ كَرِهَ ٱلۡكَٰفِرُونَ ٣٢ ﴾ [التوبة: ٣٢]

‘তারা তাদের মুখের ফুৎকারে আল্লাহর নূরকে নির্বাপিত করতে চায়। কিন্তু আল্লাহ অবশ্যই তাঁর নূরের পূর্ণতা বিধান করবেন, যদিও কাফেররা তা অপ্রীতিকর মনে করে।’ (সূরা আত-তাওবা, আয়াত : ৩২)

আরেক আয়াতেও একই কথা বলা হয়েছে :

﴿ يُرِيدُونَ لِيُطۡفِ‍ُٔواْ نُورَ ٱللَّهِ بِأَفۡوَٰهِهِمۡ وَٱللَّهُ مُتِمُّ نُورِهِۦ وَلَوۡ كَرِهَ ٱلۡكَٰفِرُونَ ٨ ﴾ [الصف: ٨]

‘তারা মুখের ফুঁৎকারে আল্লাহর আলো নিভিয়ে দিতে চায়। আল্লাহ তাঁর আলোকে পূর্ণরূপে বিকশিত করবেন যদিও কাফেররা তা অপছন্দ করে।’ (সূরা আস-সফ, আয়াত : ৮)

ইহুদী-খ্রিস্টানদের সমাজে এবং একজন খ্রিস্টান রমণীকে বগলদাবা করে সংসার করা পাশ্চাত্য ভাবনার এক বাঙালীর পক্ষেই সম্ভব এরূপ ইসলামবিরোধী ঘোষণা দেয়া। কিন্তু যারা বাস্তবজীবনে ঠোকরের পর ঠোকর খেয়েছেন, তথাকথিত শিক্ষাব্যবস্থার দুর্বৃত্তায়নে যাদের জীবনে নাভিশ্বাস উঠেছে, যে শিক্ষায় শিক্ষিত একজন মানুষ একজন বিপন্ন নায়িকার বুক থেকে নিজের মেয়েটিকে কেড়ে নিয়ে পতিতালয়ে বিক্রি করে দিয়েছে এবং যে শিক্ষার সার্টিফিকেটধারীদের কাছে প্রতিকার চাইতে গিয়ে উল্টো হয়রানীর শিকার হয়েছেন সেই শিক্ষার প্রতি তার জেগেছে ঘৃণা, ক্ষোভ ও মর্মপীড়া।

তাই তিনি এমন এক শিক্ষার আশ্রয় নেয়ার পরিকল্পনা করেছেন যে শিক্ষায় সরলতা, সততা, মমতা, জবাবদিহিতা ও দায়বদ্ধতা আছে। আছে দেশ, মানবতা ও ইসলামী ভাবনার মহত্তম চিন্তা। যে শিক্ষায় নেই প্রতারণা, ধোঁকাবাজি, অস্ত্রবাজি, টেন্ডারবাজি। নেই ধর্ষণের নূন্যতম অভিজ্ঞতা। সুতরাং সেই শিক্ষাব্যবস্থার বিরুদ্ধে ইসলামবিদ্বেষীদের বগলদাবায় বসবাস করা খিস্ট্রান রমণীর স্বামী একজন নেতা হঠাৎ উড়ে এসে যুদ্ধ ঘোষণা করলেও করতে পারে। কিন্তু জীবনবাস্তবতায় যিনি সমধিক পরিচিত, তিনিই বোঝেন কোন শিক্ষার কী ফল। তাই তো পোড় খাওয়া ব্যক্তি বনশ্রী বলতে পারেন, ছেলেকে আলেম বানাবো, যাতে করে সে বিশ্বের সকলের সেবা ও খেদমত করতে পারে। মা-বাবাকে ভালোবাসে, মাদক অনাসক্তিতে থাকে।

এফডিসি নামের যে আনন্দশালা সদা মুখরিত থাকে এবং বনশ্রী ও অন্যান্য অভিনেত্রী-অভিনায়কদের জীবন ছিল মুখরিত, যেখানে নিত্য রচিত হয় হাজারও কল্পকাহিনী, যেখান থেকে পরিকল্পনা করা হয় অভিনিত অবাস্তব নাট্যের কারসাজিতে দর্শকদের অশ্র“সিক্ত করার মহড়া, সেখানে যে প্রকৃতপক্ষেই হৃদয়ঘটিত কোনো আবেগ ও সহমর্মিতা নেই তার প্রমাণ পেয়েছেন বনশ্রী নিজেই। বিপদগ্রস্ত হয়ে এফডিসির শিল্পী সমিতিতে সাহায্য চেয়ে আবেদন করেছিলেন। কিন্তু কোনো শিল্পী তার দিকে মুখ ফিরিয়েও তাকাননি। তাই শেষ পর্যন্ত তিনি সেই গন্তব্যেই ফিরে আসার চেষ্টা করছেন, যা শতসহস্র বছর ধরে ধরার বিভিন্নপ্রান্তের সহায়-সম্বলহীনদের আশ্রয়, যাঁর দরবার কাউকে ফিরিয়ে দেয় না, যেখানে প্রত্যাবর্তনকারীকে সমাদর করা হয় পরম ক্ষমার ঐশ্বর্যে। তাইতো বনশ্রীর মুখে প্রস্ফুটিত হচ্ছে সত্য ও ঘরে ফেরার আকুলতা। আল্লাহর কাছে আত্মনিবেদনের শ্বাশত অভিপ্রায়। মুখ থেকে উচ্চারিত হচ্ছে-

‘আমি সর্বদা আল্লাহ তা‘আলাকে ডাকি, ইবাদত বন্দেগি করি। ‘নামায শিক্ষা’র বই বিক্রি করি। একটা লোক আমাকে সাহায্য করেছে। এক সাংবাদিক আছে, যিনি ইয়ং বয়সে আমাকে কাভারেজ দিয়েছিলেন। তিনি আমাকে বাসে দেখেছেন বই বিক্রি করছি। আমাকে তিনি প্রথমে চিনেননি আমিই পরিচয় দিয়েছি। এরপর তার সহায়তায় নিউজ হয়েছে।

‘আল্লাহ তা‘আলার কাছে বলি, হে আল্লাহ তা‘আলা, তুমি সব জানো। যারা আমার বুক খালি করেছে তুমি তার বুক খালি করো। আমার ছেলে আজ কারো বাড়িতে যেতে পারে না। বস্তিতে থেকে থেকে আমি কি যেন হয়ে গেছি। দু‘আ করবেন আল্লাহ তা‘আলা যেন আমার ওপর রহমত নাযিল করেন।’ আরেকটি কথা বলুন, যে লোকটি পাঁচওয়াক্ত নামায পড়ে সে কীভাবে আমার বুক খালি করে দিলো? আসলে দেখুন ও কীসের মুসলিম। আমি মেয়েকে দশ মাস বুকে লালন করেছি। সে আমার বুক খালি করে দিল? আমি এই ছেলেকে বাঁচানোর জন্য যুদ্ধ করছি।’

কাকুতির সঙ্গে আছে বিধ্বস্ত সমাজের অবাঞ্ছিত ফসল থেকে আশ্রয়। ঐশী (উচ্ছৃঙ্খল ও নেশার জীবনের প্রতিবন্ধক মনে করে যে মাবাবাকে একই সঙ্গে নির্মমভাবে হত্যা করেছিল) তো হাল-আমলের বখে যাওয়া সমাজ সংসারের সবচেয়ে বড় বিজ্ঞাপন। বনশ্রী নিজ সন্তানকে সেরকম কিছু দেখতে চান না। তাই আকুতির সঙ্গে ঝরে পড়ছে শঙ্কাও। তিনি বললেন, ‘নাকি আমার মেয়েকে ঐশী বানাচ্ছে? আমি আমার মেয়েকে দেখতে চাই। আমি আমার মেয়ের সুন্দর ও শালীন জীবনে দেখতে চাই। ঐশীর মতো দেখতে চাই না।’

হৃদয়ের অন্তস্থল থেকে বনশ্রীর এই ফিরে আসাকে স্বাগত জানাই। আল্লাহ তা‘আলা তার বর্তমান ও পরকালীন জীবন সুন্দর করুন। তার ছেলেকে আলেম বানানোর যে দৃঢ়প্রতিজ্ঞা করেছেন তা বাস্তবায়ন হোক। যেসব ইসলামবিদ্বেষী ও ইহুদী-খ্রিস্টানদের চর এদেশে ইসলাম থাক, মুসলিম থাক, ইলমে দীনের শিক্ষা থাক তা বরদাশত করতে পারে না, যারা আলেম কমানোর নামে আল্লাহর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে তারা দেখুক ইলমে দীনের মাহাত্ম্য, বড়ত্ব ও নির্মলতা। বনশ্রীর সেই হতদরিদ্র রোগা ছেলেটি এদেশের একজন মস্ত বড় আলেম হয়ে আল্লাহদ্রোহীদের মুখে চপেটাঘাত করুক আল্লাহর কাছে মনেপ্রাণে সেই কামনাই করি।

আফসোস হয় ক্ষমতাসীনদের দেখে। এরা বিদেশীদেরকে এভাবে প্রভু বানিয়ে নিয়েছে, তাদের কথায় ইসলামের বিরুদ্ধাচরণ করা, ইসলামের বৈরিতায় তৃপ্তি পায়। যুদ্ধ ঘোষণা করে ইলমে দীনের বিরুদ্ধে। অথচ আমাদের পূর্বপরবর্তী মুসলিম শাসকগণ শুধু ইলমে দীনই নয়; যে কোনো ধরনের শিক্ষা বিস্তারের জন্য সদা তৎপর ছিলেন। খলীফা মামুন এমন সব নিত্যনতুন শিক্ষাব্যবস্থা চালু করেছিলেন যা আজকের প্রেক্ষাপটে বড় অদ্ভুত ও বিস্ময়কর বলে না মেনে উপায় নেই। আর ইলমে দীনের প্রচার-প্রসারে তো ছিলেন জীবনোৎসর্গকারী।

পক্ষান্তরে বর্তমান যুগের রাজা-বাদশা ও ক্ষমতাশালীরা নিজেদের সন্তানদেরকে পশ্চিমা শিক্ষাব্যবস্থায় পারদর্শী করে তৃপ্তির ঢেকুর তোলেন এবং কুরআন-সুন্নাহ তথা ইসলামের মৌলিক বিদ্যা থেকে তাদের একেবারেই বঞ্চিত করেন। অতীতের কীর্তিমান শাসকগণের দৃষ্টিভঙ্গি ছিল সম্পূর্ণ বিপরীত। তারা তাদের সন্তানদেরকে কুরআন-হাদীসের ইলম দান করে ধন্য হতেন এবং সন্তানদের জীবন ধন্য হয়েছে বলে মনে করতেন। বেশিদিন আগের কথা নয়। মোঘল সম্রাট আলমগীরের কথাই ধরুন। ভারত শাসন করেছেন যাঁরা, তাদের কয়জন তার মতো কৃতিত্ব ও ইতিহাসে স্মরণীয় হতে পেরেছেন?

‘বাদশা আলমগীর,

কুমারে তাহার পড়াইত এক মৌলবী দিল্লির’

হৃদয়কাড়া কবিতার এ অংশই প্রমাণ করে বিখ্যাত মোঘল সম্রাট পুত্রের জন্য কী ধরনের শিক্ষার ব্যবস্থা করেছিলেন। তিনি নিজেও অত্যন্ত ইলম-অনুরাগী ছিলেন। বিশ্বখ্যাত ফাতাওয়ার গ্রন্থ ‘ফাতাওয়ায়ে আলমগীরী’ তারই তত্ত্বাবধানে সংকলিত ও প্রকাশিত হয়েছিল। আগের যুগের সব খলীফা ও আমীর-উমারা এরূপই ইলমের প্রতি সীমাহীন অনুরাগী ছিলেন। যেমন বিখ্যাত শাসক আবদুল মালিক ইবনে মারওয়ান তার পুত্রকে উপদেশ প্রদান করে বলেছিলেন, ‘হে বৎস! ইলম শিক্ষা করো। কেননা যদি নেতা হও তবে সবার ওপর শ্রেষ্ঠত্ব লাভ করবে। যদি মধ্যম ধরনের লোক হও তবে নেতার আসন লাভ করতে পারবে। আর যদি সাধারণ প্রজা হও তবে আরাম-আয়েশে জীবনযাপন করতে পারবে।’

এরপর তিনি কবিতা আবৃত্তি করে বলেন,

ومن لم يذق مر التعلم ساعة تجرع ذل الجهل طول حياته

ومن فاته التعليم وقت شبابه فكبر عليه أربعا لوفاته

وذات الفتى والله بالعلم والتقى إذا لم يكونا لا اعتبار لذاته

‘যে ব্যক্তি ইলম অন্বেষণের কিঞ্চিত তিক্ততা বরদাশত করে না, সে দিনের পর দিন মূর্খতার লাঞ্ছনা গিলতে বাধ্য হয়। যৌবনে যার ইলম শিক্ষা করার সুযোগ হয়নি তার ওপর (জানাযার) চার তাকবীর পাঠ করো। কেননা সে তো মৃত! আল্লাহ তা‘আলার শপথ! যুবকের মর্যাদা ও শ্রেষ্ঠত্ব তার ইলম ও তাকওয়ার কারণে। আর যদি এই দুটি বস্তু না থাকে তবে তার কোনো মূল্যই নেই।’

কোথায় ইতিহাসের একজন নামকরা প্রতাপশালী শাসক খলীফা মারওয়ান আর কোথাকার কোন নচ্ছান দুদিনের নেতা! যারা কীর্তিমান, যারা মানুষের হৃদয়ে শ্রদ্ধার জায়গা করতে চান তারা কখনও জ্ঞান ও ইলমের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করতে পারেন না। ইলমের সঙ্গে যুদ্ধ! সে তো তারাই পারে যারা মানুষের হৃদয়ে আবর্জনার মতো ঘৃণা হয়ে ভাসমান থাকতে চায়।

বনশ্রীর জীবনের গল্পটা শেষ করি কবির ‘কাব্যগল্প’ দিয়ে-

একুল ভাঙে ওকুল গড়ে এই তো নদীর খেলা

সকাল বেলার আমীর রে ভাই ফকির সন্ধ্যা বেলা

রে ভাই এই তো বিধির খেলা....

 #কাপল_ভ্লগিং:ভ্লগ জগতের বড় নির্লজ্জ আর আত্মমর্যাদাহীন একটি প্রকার হলো কাপল ভ্লগিং। কাপল ভ্লগিংয়ের মানে হচ্ছে স্বামী-স্ত...
27/10/2023

#কাপল_ভ্লগিং:
ভ্লগ জগতের বড় নির্লজ্জ আর আত্মমর্যাদাহীন একটি প্রকার হলো কাপল ভ্লগিং। কাপল ভ্লগিংয়ের মানে হচ্ছে স্বামী-স্ত্রী দুজন মিলে নিজেদের পারিবারিক জীবনযাত্রা, ভ্রমণ, ঘুরে বেড়ানোসহ সকল কিছু নিয়ে কন্টেন্ট তৈরি করা। কিছুদিন আগেও এই টাইপের ভ্লগিংয়ের কোনো অস্তিত্ব ছিল না। কয়েকজন কাপল এই ধরনের ভ্লগিং করে মিডিয়া জগতে ব্যাপকভাবে আলোচনায় আসার পর থেকে এর প্রবণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ব্যাপকভাবে বিবাহিত তরুণ-তরুণী এই ধরনের ভ্লগিংয়ের দিকে ঝুঁকছে।

কোনো আত্মমর্যাদাবান পুরুষ ও নারীর পক্ষে কাপল ভ্লগিং করা সম্ভব না। কিন্তু ভ্লগের এই ট্রেন্ড আমাদের অনেকের হায়া, লজ্জা আর আত্মমর্যাদাবোধকে বিকিয়ে দিয়েছে।
দাম্পত্যজীবন একান্তই ব্যক্তিগতভাবে উপভোগ করার একটা জীবন। পারিবারিক এই সম্পর্কের প্রতিটি মুহূর্তই খুবই দামি ও অমূল্য সময়। এই জীবনের চিত্র মানুষকে দেখিয়ে বেড়ানোর নয়। টাকা আর ভাইরাল হওয়ার নেশায় আমরা নিজেদের সিক্রেট লাইফটাকে লক্ষ লক্ষ মানুষের চোখের বাজারে বিক্রি করে দিচ্ছি।নিজেদের ভেতরকার খুনশুটি, রান্নাবান্না, আলিঙ্গন, বিছানায় শয়ন, বাইরে ঘুরে বেড়ানো সকল মুহূর্তকেই আমরা টাকা আর ভিউয়ের বিনিময়ে সস্তা বাজারে বিক্রি করে দিচ্ছি।

নববি যুগ থেকে মুসলিমদের গায়রাত তো এমন ছিল যে, তাদের স্ত্রীকে কোনো পরপুরুষ ঘটনাক্রমে দেখে ফেলবে এটাই তারা কল্পনা করতে পারতেন না। ইচ্ছা করে দেখিয়ে বেড়ানো তো দূরের বিষয়। কয়েক যুগ আগেও মুসলিম সমাজে এই রীতি ছিল না। বিজাতীয় সংস্কৃতির আগ্রাসন আমাদের সমাজের দীনি রক্ষণশীলতাকে বিলুপ্ত করে দিয়েছে।

এটা কীভাবে সম্ভব যে, একজন পুরুষ তার স্ত্রীকে নেটের বাজারে ছেড়ে দিয়ে ইনকামের চিন্তা করবে। এটা কি নিজের স্ত্রীর সৌন্দর্য, দেহ, জীবনাচার ইত্যাদি অনলাইনে বিক্রি করে দেওয়া নয়? আমি আমার স্ত্রীকে স্পর্শ করছি, আলিঙ্গন করছি, চোখে চোখ রেখে ভাব বিনিময় করছি, অন্দরমহলে দৈনন্দিন খুনশুটি করছি, একসাথে দুজন খাবার খাচ্ছি—এই মূল্যবান মুহূর্তগুলো কি বিক্রি করে দেওয়ার মতো, বাজারে ছেড়ে দেওয়ার মতো? কীভাবে একজন পুরুষের পক্ষে সম্ভব নিজের স্ত্রীকে তাবাররুজের মতো ভয়াবহ ও অভিশপ্ত একটি চর্চার দিকে ঠেলে দেওয়া?

আর মেয়ের পক্ষেও বা কীভাবে সম্ভব নিজেকে এভাবে হাজার হাজার মানুষের সামনে প্রদর্শন করে বেড়ানো, নিজের স্বামীর সাথে কাটানো মুহূর্তগুলো নেটের জগতে দেখিয়ে বেড়ানো? তাবাররুজের এর চেয়ে ভয়াবহ আর নিকৃষ্ট চিত্র আর কী হতে পারে! নিজেকে দেখিয়ে বেড়ানো, হাজার হাজার পুরুষের দৃষ্টির বাজারে নিজেকে উন্মুক্ত করে দেওয়া, অ্যাটেনশন পাওয়া, নির্লজ্জ বিনয়বিহীন অ্যাক্টিভিটিসহ তাবাররুজের প্রতিটি বৈশিষ্ট্যই এখানে পূর্ণ মাত্রায় বিদ্যমান।

কোনো মুসলিম নারী-পুরুষ তো দূরের কথা, কোনো আত্মমর্যাদাশীল ও ব্যক্তিত্ববান নারী-পুরুষের পক্ষেও এটা করা সম্ভব না। কিন্তু নৈতিকতা বিবর্জিত আধুনিক ভোগ, পুঁজি আর বিনোদন ভিত্তিক কালচার আমাদের হায়া, গায়রাত, ব্যক্তিত্ব, সুস্থ বোধশক্তি সবকিছুকেই মিটিয়ে দিয়েছে।
CP
বই: সৌন্দর্য প্রদর্শন, ৮১-৮২ পৃষ্ঠা

আগামীকাল ইনশাআল্লাহসবাই আমন্ত্রিত
19/10/2023

আগামীকাল ইনশাআল্লাহ
সবাই আমন্ত্রিত

 #মধু_মিলন হৃদয়ের আদান-প্রদানের এই প্রথম সাক্ষাতে যৌন-মিলন করতে চেষ্টা না করাই স্বামীর উচিৎ। অবশ্য স্ত্রী রাজী ও প্রস্ত্...
28/09/2023

#মধু_মিলন

হৃদয়ের আদান-প্রদানের এই প্রথম সাক্ষাতে যৌন-মিলন করতে চেষ্টা না করাই স্বামীর উচিৎ। অবশ্য স্ত্রী রাজী ও প্রস্ত্তত থাকলে সে কথা ভিন্ন। স্ত্রীর কর্তব্য স্বামীর ইঙ্গিতে সাড়া দেওয়া। এমন কি গোসলের পানি না থাকলেও স্ত্রীর ‘না’ করার অধিকার নেই।[1]

যেহেতু স্বামী যখন তার স্ত্রীকে বিছানার দিকে ডাকে, তখন স্ত্রী যেতে অস্বীকার করলে এবং স্বামী রাগান্বিত অবস্থায় রাত্রি কাটালে প্রভাতকাল পর্যন্ত ফিরিশ্তাবর্গ স্ত্রীর উপর অভিশাপ করে থাকেন।[2]

স্ত্রী রান্নাশালে রান্নার কাজে ব্যস্ত থাকলেও (অথবা সফরের জন্য সওয়ারীর পিঠে থাকলেও) স্বামীর ডাকে উপস্থিত হওয়া ওয়াজেব।[3]

এই মিলনে রয়েছে সদকার সম-পরিমাণ সওয়াব।[4]

একটানা নফল ইবাদত ত্যাগ করেও স্ত্রী-মিলন করা ইসলামের বিধান।[5]

এই জন্যই স্বামী উপস্থিত থাকলে তার অনুমতি ছাড়া স্ত্রী নফল রোযা রাখতে পারে না।[6]

সুতরাং অন্যান্য ব্যস্ততা ত্যাগ করে সঙ্গমের মাধ্যমে উভয়ের মনে মহাশান্তি আনয়ন একান্ত কর্তব্য।

মিলনে কেবল স্বামীর নিজের যৌনতৃষ্ণা নিবারণই যেন উদ্দেশ্য না হয়। কেবল নিজের উত্তেজনা ও কামাগ্নি নির্বাপিত করতে এবং স্ত্রীর মানসিক, শারীরিক, প্রভৃতি অবস্থা খেয়াল না করে অথবা তাকে উত্তেজিতা না করে অথবা তার বীর্যস্খলন বা পূর্ণতৃপ্তির কথা না ভেবে কেবল নিজের বীর্যপাত ও তৃপ্তিকেই প্রাধান্য দিয়ে মিলন মধু-মিলন নয়। উভয়ের পূর্ণ তৃপ্তিই হল প্রকৃত মধুর মিলন। সুতরাং সঙ্গমের পূর্বে বিভিন্ন শৃঙ্গার; আলিঙ্গন, চুম্বন, দংশন, মর্দন প্রভৃতির ভূমিকা জরুরী। নচেৎ স্ত্রী এই স্বাদ থেকে বঞ্চিত হলে তার নিকট প্রেমের কোন স্বাদই থাকবে না। পতি পেয়েও উপপতির চিন্তায় দিনপাত করবে। অতএব সচেতন যুবক যেন এতে ভুল না করে বসে। নচেৎ বিয়ের আসল উদ্দেশ্য (ব্যভিচার উৎখাত) বিফল হয়ে যাবে।[7]

প্রকাশ যে, শৃঙ্গারের সময় স্ত্রীর স্তনবৃন্ত দংশন ও চোষন কোন দোষের নয়।[8]

অবশ্য একে অন্যের লজ্জাস্থান লেহন ও চোষণ অবশ্যই ঘৃণিত আচরণ।

মিলনের জন্য কোন নির্দিষ্ট দিন-ক্ষণ বা সময় নেই। মানসিক ও শারীরিক সুস্থতা এবং মনের চাহিদা থাকলে তা করা যায়। অবশ্য অধিক নেশায় স্বাস্থ্য হারানো উচিৎ নয়। স্বাস্থ্যরক্ষার জন্য বিনা স্পর্শ ও যৌন চিন্তায় যখন যৌনাঙ্গ স্ফীত হয়ে উঠে ঠিক সেই সময়েই করা উচিৎ। তবে মনে রাখার কথা যে, একে অপরের যৌনক্ষুধা মিটাতে অসমর্থ হলে এবং যৌনবাজারে একজন গরম ও অপরজন ঠান্ডা হলে সংসারে কলহ নেমে আসে।

যেমন সঙ্গমের নির্দিষ্ট কোন পদ্ধতিও ইসলামে বর্ণিত হয়নি। এই সময় করলে সন্তান নির্বোধ হয়, ঐভাবে করলে সন্তান অন্ধ, বধির বা বিকলাঙ্গ হয় ইত্যাদি কথার স্বীকৃতি ইসলামে নেই।

আল্লাহ পাক বলেন,

﴿نِسَاؤُكُمْ حَرْثٌ لَكُمْ فَأْتُوا حَرْثَكُمْ أَنَّى شِئْتُمْ﴾

‘‘তোমাদের স্ত্রী তোমাদের শস্যক্ষেত্র স্বরূপ। সুতরাং তোমরা তোমাদের শষ্যক্ষেত্রে যেভাবে ইচ্ছা গমন করতে পার।[9]

অতএব সমস্ত রকমের আসন বৈধ। সমস্ত বৈধ সময়ে সঙ্গম বৈধ। অমাবস্যা-পূর্ণিমা প্রভৃতি কোন শুভাশুভ দিন বা রাত নয়। এতে সন্তানের কোনও ক্ষতি হয় না।[10]

স্ত্রীর মাসিক হলে সঙ্গম হারাম। কারণ, এই স্রাব অশুচি। পবিত্র না হওয়া পর্যন্ত স্ত্রীর নিকট সঙ্গমের জন্য যাওয়া নিষিদ্ধ।[11]

মাসিকাবস্থায় সঙ্গম করা এক প্রকার কুফরী।[12]

সহবাস করে ফেললে এক দ্বীনার (সওয়া চার গ্রাম পরিমাণ সোনা অথবা তার মূল্য, না পারলে এর অর্ধ পরিমাণ অর্থ) সদকাহ করে কাফ্ফারা দিতে হবে।[13]

এ ছাড়া এই অবস্থায় সঙ্গমে স্বামী-স্ত্রীর উভয়ের পক্ষে স্বাস্থ্যগত বিশেষ ক্ষতিও রয়েছে অনেক।[14]

অবশ্য মাসিকাবস্থায় সঙ্গম ছাড়া অন্যান্যভাবে যৌনাচার বৈধ।[15]

যেমন, এই সময় বা অন্যান্য সময় স্ত্রীর ঊরুমৈথুন বৈধ। এতে বীর্যপাত হলেও দোষ নেই।[16]

তবে স্ত্রীর পায়ুপথে (মলদ্বারে) সঙ্গম হারাম। যে ব্যক্তি এমন কাজ করে সে অভিশপ্ত।[17] এমন ব্যক্তির দিকে আল্লাহ কিয়ামতের দিন তাকিয়েও দেখবেন না।[18] এমন কাজও এক প্রকার কুফরী।[19] সুতরাং এই সঙ্গমে স্ত্রীর সম্মত না হওয়া ফরয।

উল্লেখ্য যে, নেফাসের অবস্থাতেও সঙ্গম হারাম। গর্ভাবস্থায় যদি ভ্রূণের কোন প্রকার ক্ষতির আশঙ্কা না থাকে, তাহলে খুবই সতর্কতার সাথে বৈধ।[20]

নির্জন কক্ষে কোন পর্দার ভিতরেই মিলন করা লজ্জাশীলতার পরিচয়। অবশ্য স্বামী-স্ত্রী উভয়েই উভয়ের সর্বাঙ্গ নগ্নাবস্থায় দেখতে পারে।[21]

এতে স্বাস্থ্যগত কোন ক্ষতিও নেই। ‘ স্বামী-স্ত্রীর একে অন্যের লজ্জাস্থান দেখতে নেই, বা হযরত আয়েশা (রাঃ) কখনও স্বামীর গুপ্তাঙ্গ দেখেননি, উলঙ্গ হয়ে গাধার মত সহবাস করো না, বা উলঙ্গ হয়ে সহবাস করলে সন্তান অন্ধ হয়। সঙ্গমের সময় কথা বললে সন্তান তোৎলা বা বোবা হয়’ ইত্যাদি বলে যে সব হাদীস বর্ণনা করা হয়, তার একটিও সহীহ ও শুদ্ধ নয়।[22]

পক্ষান্তরে আল্লাহ বলেন,

﴿هُنَّ لِبَاسٌ لَكُمْ وَأَنْتُمْ لِبَاسٌ لَهُنَّ﴾

‘‘ওরা (স্ত্রীরা) তোমাদের লেবাস এবং তোমরা তাদের লেবাস।’’[23]

ঘুমন্ত হলেও নিজ সন্তান বা অন্য কেউ কক্ষে থাকলে সঙ্গম করা উচিৎ নয়। তবে শিশু একান্ত অবোধ হলে ভিন্ন কথা।

প্রকাশ যে, মেয়েদের যৌন-মিলন না করার সাধারণ ধৈর্য-সীমা চার মাস। তাই পর্যাপ্ত কারণ ছাড়া এবং উভয়ের সম্মত চুক্তি ব্যতীত এর অধিক সময় বিরহে কাটানো বৈধ নয়।[24]

সঙ্গমের পূর্বে নিম্নের দুআ পাঠ কর্তব্য;

بِسْمِ اللهِ، اَللَّهُمَّ جَنِّبْنَا الشَّيْطَانَ وَجَنِّبِ الشَّيْطَانَ مَا رَزَقْتَنَا.

উচ্চারণঃ- বিসমিল্লাহি আল্লা-হুম্মা জান্নিবনাশ্-শাইত্বানা ওয়া জান্নিবিশ্-শাইত্বানা মা রাযাক্বতানা

অর্থাৎ, আমি আল্লাহর নাম নিয়ে শুরু করছি। হে আল্লাহ! আমাদের নিকট থেকে শয়তানকে দূরে রাখ এবং আমাদেরকে যে সন্তান দান করবে তার নিকট থেকেও শয়তানকে দূরে রাখ।

এই দুআ পাঠ করে সহবাস করলে উক্ত সহবাসের ফলে সৃষ্টি সন্তানের কোন ক্ষতি শয়তান করতে পারে না।[25]

প্রকাশ যে, শয়তানও মানুষের সন্তান-সন্ততিতে অংশগ্রহণ করে থাকে; যদি সঙ্গমের পূর্বে আল্লাহর নাম না নেওয়া হয় তাহলে।[26]

সঙ্গম বা বীর্যপাতের পর গোসল (মাথা শুদ্ধ সর্বশরীর ধোয়া) ফরয। তবে নগ্নাবস্থায় স্বামী-স্ত্রী আলিঙ্গনাদি করলে, বীর্যপাত না হলে এবং মযী (বীর্যের পূর্বে নির্গত আঠাল তরল পদার্থ) বের হলেও গোসল ফরয নয়। লজ্জাস্থান ধুয়ে ওযু যথেষ্ট।

লিঙ্গাগ্র যোনী-মুখে প্রবেশ করালে বীর্যপাত না হলেও উভয়ের উপর গোসল ফরয। অনুরূপ লিঙ্গাগ্র যোনীপথে প্রবেশ না করিয়েও যে কোন প্রকারে বীর্যপাত করলে গোসল ফরয।[27]

স্ত্রীর ঊরু-মৈথুন করে বীর্যপাত করলে স্বামী গোসল করবে। স্ত্রী (বীর্যপাত না হলে) গোসল করবে না। ঊরু ধুয়ে ওযু যথেষ্ট।[28]

একাধিক বার সঙ্গম অথবা গোসল ফরযের একাধিক কারণ হলেও শেষে একবার গোসলই যথেষ্ট।[29] স্বামী-সঙ্গম করার পর-পরই স্ত্রীর মাসিক শুরু হয়ে গেলে একেবারে মাসিক বন্ধ হওয়ার পর গোসল করতে পারে।[30] অর্থাৎ মাসিকাবস্থায় পূর্ব-সঙ্গমের জন্য গোসল জরুরী নয়।

প্রথমে স্বামী গোসল করে স্ত্রীর গোসল করার পূর্বে শীতে তার দেহের উত্তাপ নেওয়া কোন দোষের নয়।[31]

একই রাত্রে বা দিনে একাধিকবার সহবাস করতে চাইলে দুই সহবাসের মাঝে ওযু করে নেওয়া উচিৎ। অবশ্য গোসল করলে আরো উত্তম। এতে পুনর্মিলনে অধিকতর তৃপ্তি লাভ হয়।[32]

নিদ্রার পূর্বে সঙ্গম করে ফজরের পূর্বে গোসল করতে চাইলে লজ্জাস্থান ধুয়ে ওযু অথবা তায়াম্মুম করে শয়ন করা উত্তম।[33]

অবশ্য সর্বোত্তম হলো ঘুমাবার পূর্বেই গোসল করে নেওয়া।[34] কারণ, দীর্ঘক্ষণ নাপাকে না থাকাই শ্রেয়। তবে গোসল না করে যেন কোন নামায নষ্ট না হয়। যেহেতু যথাসময়ে নামায আদায় করা ফরয।

রোযার দিনে স্ত্রীচুম্বন ও শৃঙ্গারাচারে বীর্যপাত না হলে রোযা নষ্ট হয় না।[35] যদিও প্রেমকেলিতে মযী স্খলন হয় তবুও কোন ক্ষতি নেই।[36]

স্ত্রীর হস্তমৈথুনে বা সমকামে বীর্যপাত করলে রোযা নষ্ট হয়।[37]

স্বামী-স্ত্রী কোন প্রকার ভুলে রোযার দিনে সঙ্গমে লিপ্ত হয়ে পড়লে মনে পড়া মাত্র পৃথক হয়ে যাবে। এর জন্য কাযা কাফ্ফারা নেই।[38]

ইচ্ছাকৃত সঙ্গম করলে তওবা, রোযা কাযা এবং কাফ্ফারা ওয়াজেব; একটি ক্রীতদাস স্বাধীন করবে, না পারলে (যথার্থ ওজর ছাড়া) নিরবচ্ছিন্নভাবে দুই মাস একটানা রোযা পালন করবে, তা না পারলে ষাটজন গরীবকে (মাথাপিছু ১কিলো ২৫০ গ্রাম করে) খাদ্য (চাল) দান করতে হবে।[39]

অবশ্য স্ত্রী সম্মত না হলে জোরপূর্বক সহবাস করলে স্ত্রীর রোযা নষ্ট হয় না।[40]

ই’তিকাফ অবস্থায় সঙ্গম বৈধ নয়।[41]

হজ্জ করতে গিয়ে ইহরাম অবস্থায় সঙ্গম করলে হজ্জ বাতিল হয়ে যাবে। হজ্জের সমস্ত কাজ পূর্ণ করতে হবে, মক্কায় অতিরিক্ত একটি উট ফিদয়াহ দিতে হবে এবং নফল হলেও ঐ হজ্জ আগামীতে কাযা করতে হবে।[42]

মিলনের গুপ্ত রহস্য বন্ধু-সখী বা আর কারো নিকট প্রকাশ করা হারাম। স্ত্রী-সঙ্গমের কথা যে অপরের নিকট খুলে বলে সে ব্যক্তি কিয়ামতে আল্লাহর নিকট সবচেয়ে নিকৃষ্ট পর্যায়ের লোকেদের দলভুক্ত হবে।[43]

এমন ব্যক্তি তো সেই শয়তানের মত, যে কোন নারী-শয়তানকে রাস্তায় পেয়ে সঙ্গম করতে লাগে, আর লোকেরা তার দিকে চেয়ে চেয়ে দেখে।[44]

উল্লেখ্য যে, বিবাহ-বন্ধনের পর সারার পূর্বে স্বামী-স্ত্রীর দেখা-সাক্ষাৎ ও মিলন বৈধ।[45]

প্রকাশ থাকে যে, বাসর রাত্রির শেষ প্রভাতে দুধ ইত্যাদি দিয়ে বাসর ঠান্ডা করার আচার ইসলামী নয়।

বরের জন্য বাসর-সকালে উঠে বাড়িতে উপস্থিত আত্মীয়-সবজনকে সালাম দেওয়া এবং তাদের জন্য দুআ করা মুস্তাহাব। আত্মীয়-সবজনেরও মুস্তাহাব, তার জন্য অনুরূপ সালাম-দুআ করা। আল্লাহর রসূল (ﷺ) এমনটি করেছেন।[46]

[1] (আল-ফাতাওয়াল মুহিম্মাহ, লিনিসাইল উম্মাহ ৯৬পৃঃ) [2] (বুখারী, মুসলিম, আবু দাঊদ, মুসনাদে আহমদ, সহীহ আল-জা-মিউস সাগীর অযিয়াদাতুহ ৫৩২নং) [3] (নাসাঈ, ত্বাহাবী, মুশকিলুল আসার, মিশকাতুল মাসাবীহ ৩২৫৭নং, সহীহ আল-জা-মিউস সাগীর অযিয়াদাতুহ ৫৩৪নং) [4] (মুসলিম, নাসাঈ) [5] (বুখারী মুসলিম, মিশকাতুল মাসাবীহ১৪৫নং) [6] (মিশকাতুল মাসাবীহ ৩২৬৯নং) [7] (অকাফাত মাআল উসরাহ, সাবরী শাহীন ৫০-৫১পৃঃ) [8] (ফাতাওয়া ইবনে উসাইমীন ২/৭৫৭) [9] (সূরা বাক্বারা ২/২২৩) [10] (বুখারী, মুসলিম, আদাবুয যিফাফ ৯৯-১০০পৃঃ) [11] (আলকুরআন কারীম ২/২২২) [12] (আবু দাঊদ, তিরমিযী, ইবনে মাজাহ, নাসাঈ, আদাবুয যিফাফ ১২০-১২১) [13] (আবু দাঊদ, তিরমিযী, নাসাঈ, ইবনে মাজাহ প্রভৃতি, আযি ১২২পৃঃ) [14] (তুহফাতুল আরূস, ১৩৯ পৃঃ) [15] (মুসলিম, আবু দাঊদ, প্রভৃতি, আদাবুয যিফাফ ১২১-১২২পৃঃ) [16] (জামিউ আহকামিন নিসা, ১/৯০) [17] (আবু দাঊদ, মুসনাদে আহমদ) [18] (নাসাঈ, তিরমিযী) [19] (আবু দাঊদ, তিরমিযী, ইবনে মাজাহ, আদাবুয যিফাফ ১০১-১০৪পৃঃ) [20] (ফাতাওয়াল মারআহ ১০৩পৃঃ) [21] (ফাতাওয়া ইবনে উসাইমীন ২/৭৬৬) [22] (দেখুন, তুহফাতুল আরূস, ১১৮-১১৯পৃঃ) [23] (সূরা আল-বাক্বারা (২) : ১৮৭) [24] (ফাতাওয়াল মারআহ ৭৭পৃঃ) [25] (বুখারী, আবু দাঊদ, তিরমিযী, আদাবুয যিফাফ ৯৮পৃঃ) [26] (সূরা ইসরা (১৭) : ৬৪, তফসীর ইবনে কাসীর ৩/৫৪) [27] (মাজাল্লাতুল বহুসিল ইসলামিয়্যাহ ২২/৮৯) [28] (জামিউ আহকামিন নিসা, ১/৯০পৃঃ) [29] (ঐ ১/১২৫পৃঃ) [30] (ঐ ১/১২৪) [31] (আদাবুয যিফাফ ১০৫ পৃঃ) [32] (মুসলিম, ইবনে আবী শাইবাহ , মুসনাদে আহমদ, আবু দাঊদ, নাসাঈ, তাবঃ, আদাবুয যিফাফ ১০৮পৃঃ) [33] (আদাবুয যিফাফ ১১৩,১১৭-১১৮ পৃঃ) [34] (ঐ১১৮পৃঃ) [35] (ফাতাওয়া ইবনে উসাইমীন ১/৫০৫) [36] (মাজাল্লাতুল বহুসিল ইসলামিয়্যাহ ১৪/১০৪) [37] (ফাতাওয়া ইবনে উসাইমীন ১/৫০৭) [38] (মাজাল্লাতুল বহুসিল ইসলামিয়্যাহ ১৪/১১৩) [39] (বুখারী, মুসলিম, আবু দাঊদ, তিরমিযী, নাসাঈ, ইবনে মাজাহ, ফিকহুস সুন্নাহ ১/৪১৩-৪১৪) [40] (ফাতাওয়া ইবনে উসাইমীন ১/৫৪২) [41] (সূরা আল-বাক্বারা (২) : ১৮৭) [42] (আল-ফাতাওয়া আল- ইসলামিয়্যাহ ২/২৩২) [43] (ইবনে আবী শাইবাহ , মুসলিম, মুসনাদে আহমদ, প্রভৃতি আদাবুয যিফাফ ১৪২ পৃঃ) [44] (মুসনাদে আহমদ,ইবনে আবী শাইবাহ ,আবু দাঊদ,বাইহাকী,প্রভৃতি আদাবুয যিফাফ ১৪৩-১৪৪ পৃঃ) [45] (মাজাল্লাতুল বহুসিল ইসলামিয়্যাহ ২২/২০৬) [46] (নাসাঈ, আদাবুয যিফাফ ১৩৮-১৩৯ পৃঃ)

Address

Rajshahi

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when সহীহ আকিদার সালাফী ম্যারেজ মিডিয়া-মাসনা,সুলাসা,রুবায়া posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to সহীহ আকিদার সালাফী ম্যারেজ মিডিয়া-মাসনা,সুলাসা,রুবায়া:

Videos

Share

Category


Other Bridal Shops in Rajshahi

Show All