17/04/2023
কেমন চলছে আত্মিকের ইঁট ভাটা স্কুল??
আসুন জেনে নিই স্কুলের দিদিমণি দের কাছ থেকেই..
এই মাসে অর্থাৎ এপ্রিল 2023 এ আত্মিক পরিচালিত ইঁট ভাটা স্কুল 6 মাসে পদার্পণ করলো, এই 6 মাসে আমাদের স্কুলের বাচ্চাদের শিক্ষার কতটা উন্নতি হয়েছে এই রিপোর্টে সেটা আলোচনা করা হয়েছে বিস্তারিত ভাবে এবং আগামী 2 মাসে আরো যে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় গুলোর শিক্ষা দেওয়া হবে তারও একটা রূপ রেখা এই রিপোর্টেই তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে।
আত্মিক পরিচালিত ইঁট ভাটা স্কুল গুলো চলে বছরে 8 মাস, প্রতি বছর স্কুল শুরু হয় নভেম্বরে এবং চলে পরবর্তী বছরের জুন মাস পর্যন্ত এই গোটা আট মাস জুড়ে, ইঁট তৈরির মরশুম কে কেন্দ্র করে। বিগত বছরের ন্যায় এ বছরও আমাদের চারটি ইঁটভাটা স্কুল চলছে ব্যান্ডেল- আদি সপ্তগ্রাম অঞ্চলের পাঁচটি ইটভাটায়। ছাত্র সংখ্যা প্রায় 200।
স্কুল গুলো সম্পর্কে সামান্য কিছু তথ্য (যেমন: নাম, ছাত্র সংখ্যা, নিযুক্ত শিক্ষিকা ইত্যাদি):
1)RNS Brick Field School
Group A students-29
Group B Students-33
Total students- 62
Teacher- Subhra di
2)INDIA Brick Field School
Group A students-23
Group B Students-32
Total students- 55
Teacher- Pinki di
3)SUN Brick Field School
Group A students-29
Group B Students-32
Total students- 61
Teacher- Rinku di
4)DMB Brick Field Schools
Group A students-7
Group B Students-15
Total students- 22
Teacher- Shilpi di
আমরা স্কুল শুরুতেই ছাত্র দের দুটো গ্রুপে বিভক্ত করি Group A এবং Group B. Group A অর্থাৎ 3-6 বছরের শিশুরা এবং Group B অর্থাৎ 7-14 বছরের শিশুরা। আমাদের শিক্ষা প্রণালী Non-formal, open air হলেও আমরা যে ন্যূনতম পাঠক্রম অনুসরণ করি তা এই দুই শ্রেনীর বাচ্চাদের মাথায় রেখেই তৈরি করা হয়। আমরা প্রতি সপ্তাহের জন্য একটা সাপ্তাহিক Lesson plan তৈরি করি, এবং এটার উপর ভিত্তি করেই আমাদের স্কুলের সবকিছু (লেখা,পড়া, ছবি আঁকা, খেলা ইত্যাদি সব গুলো) হয়। এই Lesson plan কিভাবে তৈরি করা হয়, কোন কোন বিষয়ে নজর দেওয়া হয় এসব গুলো নিয়ে আর একদিন বিস্তারিত ভাবে আপনাদের সাথে আলোচনা করা হবে, এগুলো আপনাদের সামনে তুলে ধরতে পারলে আমরাই আনন্দিত হব।
বিগত ছ'মাসে যা শেখানো হয়েছে:
Group A: (3-6) years students-
1) writing alphabets and consonants in both English and Hindi language. A-B-C-D, अ-आ-क-ख.
2) Pattern writing 1 to 15 number.
3) আমরা বাচ্চাদের একাধিক কবিতা (10-12 টা) এবং গল্প মুখস্থ করিয়েছি। কবিতা/ছড়া গুলো তারা খুবই আনন্দের সঙ্গে স্কুল শুরুতেই প্রার্থনা এবং তার পরে সম-স্বরে আবৃত্তি করে, এবং গল্প গুলো নানান অঙ্গ ভঙ্গি করে পরিবেশন করে। এগুলো তাদের মানসিক বিকাশে একটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
4) চার্ট পড়া- স্কুলে প্রত্যেহ একাধিক চার্ট টানানো হয় যার থেকে আমরা বাচ্চাদের বিভিন্ন পশুপাখি ফল রং ইত্যাদি শেখাই।
5) ড্রইং- এই ছোট ছোট বাচ্চাগুলোর জন্য ড্রইং খাতায় আমরা কখনো বল কখনো টুপি কখনো ফল বা ফুল, সবজি ইত্যাদি এঁকে দিই এবং তাদের রঙ ভরতে দেওয়া হয়। রংটা ওরা ভরে আকার বই দেখে, এতে ওদের রং সম্বন্ধেও ধারণা তৈরি হয় -রঙ চেনার ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
Group B: (7-14) years students-
1) writing alphabets and consonants in both English and Hindi language. A-B-C-D, अ-आ-क-ख.
2) নিজের নাম, বাবার নাম, মাতার নাম, ঠিকানা শিখে গেছে
3) 1-70 পর্যন্ত লেখা, তার সাথে যোগ-বিয়োগ, গুন-ভাগ, নামতা ইত্যাদি শেখানো হয়েছে।
4) চার্ট পড়া- এই বাচ্চাদের স্কুলে টানানো থাকা চার্ট গুলো পড়তে দেয়া হয় এবং ছোট বাচ্চাদের পড়াতে উৎসাহ দেওয়া হয় তাতে ওদের নিজেদেরও শেখা হয়। ওদের শিক্ষার জন্য আমরা ফল ফুল পশু পাখি ইত্যাদি চার্টের সঙ্গে- পার্টস অফ হিউম্যান বডির চার্টে বেশি গুরুত্ব দিই। এতে ওরা চার্টে দেওয়া বিষয়টি নিজের মাতৃভাষা হিন্দি এবং ইংরেজি উভয়ের নাম জানে, এবং সে সম্পর্কে অতিরিক্ত আরও ধারণা আমরা দিয়ে থাকি।
5) ড্রয়িং- এদের ড্রয়িং শেখানো শুরু হয়েছিল সার্কেল, রেক্টাঙ্গেল, ট্রাইঙ্গেল, স্ট্রেট লাইন, ইত্যাদি অঙ্কন এর মাধ্যমে এতে আস্তে আস্তে তাদের আঁকা তে পরিপক্ক হয়ে উঠলে এখন ড্রয়িং বইতে আঁকা ছবি দেখে দেখে আঁকতে এবং রং ভরতে দেওয়া হয়।
6) শরীরচর্চও খেলাধুলা- শরীর চর্চার ক্লাসে এদের উৎসাহ দেখার মত। আমরা তোদের সামান্য শরীরচর্চা করাই কখনো আবার এই ক্লাসে খেলাধুলাও করানো হয়।
7) পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা- বিশেষ করে এই বাচ্চা গুলোর ক্ষেত্রে যারা একটু বড় হয়ে গেছে তাদের জন্য পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখার দিকে আমরা একটু বেশি নজর দি, ওদের শেখায় নিয়মিত স্নান করতে স্কুলে আসার আগে হাত পা ধুয়ে আসতে। টিফিন খাওয়ার আগে হাত ধুয়ে নিতে ইত্যাদি।
আগামী দু মাসের প্ল্যানিং-
Group A: (3-6) years students-
1) বাচ্চাগুলোকে কয়েকটা আরও বেশি করে কবিতাও কাহানি শেখানো।
2) 1-50 অব্দি সংখ্যা লিখতে শেখানো
3) যারা সম্পূর্ণ A-B-C-D, अ-आ-क-ख. শিখে গেছে তাদের এবার একটু একটু করে নিজের নাম লিখতে শেখানো। এবং যারা এখনো শেখেনি তাদের শেখানো। হিন্দি এবং ইংরেজিতে শব্দ গঠন।
4) একটু একটু করে ছবি দেখে ফুল বা ফল ইত্যাদি আঁকা শেখানো।
5) চার্ট দেখে পশু পাখির নাম ইংরেজিতে শেখানো।]
Group B: (7-14) years students-
1) 1-100 অব্দি লেখা
2) ইংরেজিতে নিজের নাম ঠিকানা, ফুল ও ফলের নাম লেখা ইত্যাদি। এছাড়াও বিপরীত শব্দ, ছোট ছোট বাক্য গঠন ইত্যাদি শেখানো হবে।
3) মাল্টিপ্লিকেশন অডিশন সাবস্ট্রাকশন ইত্যাদি শেখানো।
এই বাচ্চাগুলোর শেখানোর মতন আর বিশেষ কিছু বাকি নেই যেহেতু আট মাসের ইট তৈরির মরশুমে ছমাস পর থেকেই কাজ কমতে শুরু করে তাই তারা এবার নিজেদের বাড়ি ফিরতে শুরু করে। আর সেটা মাথায় রেখেই আমরা তাদের যতটুকু শেখানোর সেটা নভেম্বর থেকে এপ্রিল এই 6 মাসের মধ্যেই শিখিয়ে দিই।
এখনো অব্দি দুটো পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে আর একটা পরীক্ষা নেয়া হবে এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে এখন আমাদের এই বাচ্চাগুলোকে নিয়ে মূল লক্ষ্য যেটুকু শিখেছে সেটুকু তাদের বারবার প্র্যাকটিস করানো এবং যারা এখনো শিখতে পারেনি তাদের শেখানো। কিছু কিছু বাচ্চা খুবই অ্যাডভান্স তারা খুব সহজেই অনেক কিছু শিখে যাচ্ছে তাদের আমরা বেশি করে প্রহ উৎসাহিত করছি এবং কিছু বাচ্চা রয়েছে যাদের সময় লাগছে তাদের ধরে ধরে শেখাচ্ছি। ফলে লেসন প্ল্যান একটা থাকলেও আমরা বাচ্চার মানসিক ও বৌদ্ধিক অবস্থা বুঝে তার প্রতি আলাদা নজর দিচ্ছি।
আমরা স্কুলে সারাবছর ধরে যে সকল কবিতা ও কাহিনী গুলো পড়ানো হয় সেগুলোর কয়েকটা নিচে উল্লেখ করা হলো:
:কবিতা:
1. মছলি জল কি রানি হে
2. গোল গোল পানি
3. মোচি ভাই বাত শুনো
4. বান্দর মামা
5. এক থি বিল্লি একথা চুহা
6. পেটু পন্ডিত
7. গুড়িয়া রানী
8. বিল্লি মসি
9. বেবি বেবি সো জা
10. চুহা ভাই
11. আচ্ছা বাচ্চা
12. তিতলি উড়ি
13. মোটু রাম
14. হাতি রাজা কাহা চালি
15. ভোলে ভালে দাদাজি
16. আলুকা চালু বেটা
17. মেরি নানি
18. ঘড়ি
19. জনি জনি ইয়েস পাপা
20. টুইংকেল টুইংকেল লিটল স্টার
21. রেইন রেইন গো এ্য ওয়ে
: কাহানি :
1. বাঘ কা বাচ্চা
2. গুব্বারে কি ইচ্ছা
3. লোমড়ি লোমড়ি
4. এক জঙ্গল থা
5. খরগোশ আর কাছুয়া
6. লালাচ কা ফল
7. রাজু কা শখ
8. পুসি পুসি
9. কাছুয়া অর দো বাগুলে
10. লালচি লোমড়ি
সাধারণ জ্ঞান:
প্রত্যেক সপ্তাহে একটি নতুন টপিক বা আলোচ্য বিষয় থাকে। যেমন- Time & clock, Our family, keeping safe, Environment, week & Months, Insect, Sports প্রভৃতি বিষয়ে আলোচনা করা হয়। এতে বাচ্চারা প্রত্যেক সপ্তাহে নতুন একটি বিষয় সম্পর্কে ধারণা লাভ এবং তাদের সাধারণ জ্ঞান বর্ধিত হয়।
পরীক্ষা: আত্মিক পরিচালিত ব্রিক ফিল্ড স্কুল গুলির আট মাসের সময় সীমায় যা পড়ানো এবং শেখানো হয় সেটার উপর ভিত্তি করে পরীক্ষা নেওয়া হয়।
পরীক্ষা নেয়ার পদ্ধতি- পরীক্ষা নেওয়া হয় তিনবার। দুই মাস অন্তর অন্তর। প্রথম পরীক্ষা নেয়া হয় ডিসেম্বর মাসের শেষে, দ্বিতীয় পরীক্ষা নেওয়া হয় ফেব্রুয়ারি মাসের শেষে, আর তৃতীয় পরীক্ষা নেওয়া হয় এপ্রিল মাসের শেষে। পরীক্ষার বিষয় ও মান- প্রথম পরীক্ষা নেয়া হয় দুটি বিষয়ের ওপর ভাষা(হিন্দী),গণিত(অঙ্ক)। প্রশ্নপত্রে পূর্ণমান কুড়ি। প্রথম একমাস যেহেতু ইংরেজি শেখানো হয় না তাই প্রথম পরীক্ষা ইংরেজি বিষয়টি পরীক্ষা নেয়া হয় না।
দ্বিতীয় পরীক্ষায় থাকে তিনটি বিষয় ভাষা (হিন্দি), গণিত (অঙ্ক), ইংরাজী। ভাষা ও গণিত পরীক্ষা প্রশ্নপত্রের মান থাকে 30 আর ইংরেজি পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের মান থাকে 20। তৃতীয় পরীক্ষাটিতেও থাকে তিনটি বিষয় ভাষা গণিত ও ইংরেজি
প্রশ্নপত্রে মান থাকে ৩০। *প্রথম পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী ছাত্র-ছাত্রী-1) সান বি এফ এস- মোট ছাত্র-ছাত্রী(6-14)=33জন, পরীক্ষা অংশগ্রহণকারী ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা ২০ জন।
2)আর এন এস বি এফ এস-মোট ছাত্র ছাএী(6-14)=19জন, পরীক্ষা অংশগ্রহণকারী ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা14 জন।
3)ইন্ডিয়া বি এফ এস মোট ছাএ ছাএী(6-14)=25 জন, পরীক্ষা অংশগ্রহণকারী ছাত্রছাত্রী সংখ্যা জন 10 জন।
4)ডি এম বি বি এফ এস মোট ছাএ ছাত্রী(6-14)=15 জন পরীক্ষা অংশগ্রহণকারী ছাত্রছাত্রী সংখ্যা 9জন।
দ্বিতীয় পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী ছাত্র-ছাত্রী- 90% of total students. মোট ছাত্র (7-14 বছর) 99. পরীক্ষা দিয়েছে 90 জন।]
বাচ্চাদের যথেষ্ট পরিমাণে শেখানোর চেষ্টা করা হয়, যেসব বাচ্চারা শিখে উঠতে পারে সেইসব বাচ্চাদের পরীক্ষা নেয়া হয়। পরীক্ষা নেওয়ার ক্ষেত্রে সব থেকে বড় সমস্যাটা যেটা হয়, ইটভাটা গুলোতে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় পরিযায়ী শ্রমিকরা যারা কাজ করতে আসছেন তারা তাদের ৮ মাসের ইট তৈরির মোসরুম সম্পূর্ণটা কাজ না করেই সময়সীমার মাঝেই হয়তো ইটভাটা ত্যাগ করে চলে যাচ্ছেন। সেক্ষেত্রে তার সঙ্গে তার বাচ্চারাও চলে যাচ্ছে এই বিশেষ একটি কারণে আমরা প্রথম পরীক্ষার পরে দ্বিতীয় পরীক্ষায় অনেকগুলো বাচ্চাকেই পাচ্ছিনা, এবং যে বাচ্চাগুলো চলে যাচ্ছে তাদের যাওয়াটা এতটাই আচমকা যে তাদের আমরা আমাদের এনজিওর পক্ষ থেকে তারা যতটুকুই শিখেছে তার ভিত্তিতে একটা শংসাপত্র সেটুকুও তার হাতে তুলে দিতে অসমর্থ। অপরপক্ষে আমাদের দিদিমনিরা এতটাই পারদর্শী, কোন বাচ্চা যে হয়তো প্রথম পরীক্ষার সময় ভাটায় ছিল না বা প্রথম পরীক্ষার সময় পরীক্ষা দেওয়ার মতন প্রশিক্ষিত ছিল না তাদেরও দু থেকে চার মাসের মধ্যেই শিখিয়ে পড়িয়ে দ্বিতীয় বা তৃতীয় পরীক্ষায় বসার উপযুক্ত করে তোলে। যেমন প্রথম পরীক্ষার সময় অংশগ্রহণ কারি মোট বাচ্চা ছিল 53 টা, এই ফেব্রুয়ারি মাসের শেষে যখন দ্বিতীয় পরীক্ষাটি নেওয়া হয় তখন বাচ্চা সংখ্যা 90, তার মধ্যে ওই 53 টা বাচ্চার অনেকেই নেই, অনেক বাচ্চাই চলে গেছে তার জায়গায় এসেছে অনেক নতুন বাচ্চা, তাদের এই অল্প সময়ের মধ্যেই দিদিমনিরা শিখিয়ে দ্বিতীয় পরীক্ষায় বসার মতন উপযুক্ত করে তুলেছে। আমরা বাচ্চাদের পরীক্ষা দেওয়াতে এত বেশি উৎসাহ দেখাই তার কারণ পরীক্ষাগুলো নেয়ার মাধ্যমে বোঝা যায় বাচ্চারা কতটা শিখলো। কোন বাচ্চা পরীক্ষায় কম নম্বর পাচ্ছে এটার অর্থ সে কম শিখেছে এটা নয়; আমরা তাকে তার মতন করে শেখাতে পারিনি। সে কোথায় কোথায় কম নম্বর পাচ্ছে এটা দেখে আমরা বুঝবো তাকে কোন কোন জিনিসগুলো এখনো আরো বেশি করে আমাদের পড়াতে বা শেখাতে হবে। এই গোটা শিক্ষা ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে আমাদের উদ্দেশ্য একটাই থাকে যে তাদের একটু হিসেব করতে পারা, একটু পড়তে পারা, নিজের নাম বাবা- মায়ের নাম, ঠিকানা, সঙ্গে চোখের আশেপাশে যে সমস্ত ফুল ফল, শাকসবজি, পশুপাখি দ্রব্যাদি দেখতে পাচ্ছি সেগুলোকে নিজের মাতৃভাষায় এবং ইংরেজিতে কী কী বলা হয় ইত্যাদি গুলোতে শক্ত পোক্ত করে তোলা। আমাদের নেওয়া পরীক্ষায় প্রশ্নগুলো এর ওপরে ভিত্তি করেই থাকে, এই গোটা আট মাসে আমরা যদি একটা বাচ্চাকে সব সময়ের জন্য পাই সে ক্ষেত্রে আমাদের উদ্দেশ্য একটাই থাকে- উপরে উল্লেখিত বিষয়গুলো যেন আমরা এই বাচ্চাটাকে ভালো করে শেখাতে পারি। সে যখন পরীক্ষায় ঠিক ভাবে উত্তর দিতে পারছে না এর অর্থাৎ ওই বাচ্চাটাকে শেখাতে আমাদের ই কোথাও ত্রুটি রয়ে গেছে। সেক্ষেত্রে আমরাই বাচ্চাটার দিকে আরো বেশি বেশি করে নজর দিই। আগামী পরীক্ষা, অর্থাৎ শেষ পরীক্ষা নেওয়া হবে এবছর এপ্রিল মাসের শেষে, তারপরেই তাদের তিনটে পরীক্ষার উপর ভিত্তি করে একটি করে ফাইনাল মার্কশিট বা রেজাল্ট প্রদান করা হবে। 8 মাসের স্কুল সময় সীমা সম্পন্ন হলে তোদের পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বর/ গ্রেড যুক্ত একটা শংসাপত্র আমরা ওদের প্রদান করি, যেটা ওদের দেশে ফিরে গিয়ে কোন সরকারি স্কুলে ভর্তি হওয়ার ক্ষেত্রে অনেক বেশি সহযোগি হয়।
বেস লাইন ফর্ম: একটি শিক্ষাবর্ষে যতগুলো বাচ্চাকে আমরা পাই প্রত্যেকটা বাচ্চাকে নিয়ে আমরা একটা করে বেস লাইন ফর্ম তৈরি করি, সেই ফর্মে বেশ কিছু ইন্ডিকেটর উল্লেখ থাকে যেখান থেকে একটা বাচ্চার সামগ্রিক উন্নতি বিচার করা সম্ভব হয়। নিচে এটার একটা স্যাম্পেল দেওয়া হলো।
Extra Curricular activities:
ড্রইং: এই ড্রয়িং সম্পর্কে আমরা আগে আলোচনা করেছি এখানে বাচ্চাদের নিজহস্তে করি ড্রইং এর কিছু স্যাম্পেল পেস্ট করা হলো।
খেলাধুলা ও শরীরচর্চা: স্কুলের শেষে বাচ্চাদের নিয়ে আমরা নিয়মিত শরীরচর্চা এবং খেলা করে থাকি। শরীরচর্চা অর্থাৎ খুবই প্রাথমিক স্তরের কিছু ফ্রি হ্যান্ডে এক্সারসাইজ, স্ট্রেচিং ইত্যাদি। এবং খেলাধুলা অর্থাৎ কখনো লুডু, কক ব্যাট অথবা বাচ্চারা গোল করে বসে মিউজিকাল চেয়ার, বল ছড়াছড়ি ইত্যাদি। এগুলো করার ফলে বাচ্চারা একটু আনন্দ পায় স্কুলে শুধু একঘেয়ে পড়াশোনা অনেক সময় বাচ্চাদের নিরানন্দের কারণ হয়ে ওঠে তাই এই ধরনের এক্টিভিটিস করানো হয় বাচ্চাদের একটু আনন্দ দেওয়ার জন্য।
টিফিন: এই সেসানে আমরা এখনো অব্দি সপ্তাহে দুদিন করে টিফিন দিয়ে আসছি।
এই মুহূর্তে আমাদের চারটে স্কুল মিলিয়ে মোট বাচ্চার সংখ্যা 200, সপ্তাহে দুদিন করে টিফিন আয়োজন করতে সহযোগীতা করছেন আপনারাও, বহু মানুষ এগিয়ে আসছেন আমাদের সহযোগিতা করতে, দুদিন টিফিনের ব্যবস্থা করার ফলে বাচ্চারা স্কুলে উপস্থিত থাকাতে অনেক বেশি বেশি করে উৎসাহিত হচ্ছে। তাই অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই আপনাদেরও।
সত্যিই আপনাদের কাছে কৃতজ্ঞতা স্বীকারের ভাষা নেই আমাদের, বহু মানুষ রয়েছেন যারা এগিয়ে আসছেন আমাদের এই কাজে সহযোগিতা করতে, বই- খাতা- পেন- পেন্সিল ইত্যাদি দিয়ে বহু মানুষ সহযোগিতা করছেন, বহু স্কুল রয়েছে যারা শিক্ষা সামগ্রী দিয়ে আমাদের স্কুল চালিয়ে নিয়ে যেতে সহযোগিতা করছে, আর বহু মানুষতো টিফিনের আয়োজন করতে সহযোগিতা করছেনই, আপনাদের সকলের কাছে আমরা কৃতজ্ঞ। আপনাদের আমরা আমন্ত্রণ জানাই আমাদের স্কুলে আসার জন্য, এক দিন ঘুরেই যাননা, দেখেই যান কিভাবে আত্মিকের ইঁট ভাটা স্কুল চলছে, কিভাবে আমরা বাচ্চাদের পড়াচ্ছি। আর অনুরোধ রইলো, ভালো লাগলে আমাদের এই লেখাগুলো একটু শেয়ার করুন, পৌঁছে দিন তার কাছে যিনি সহযোগিতা করতে চান এই ধরনের সামাজিক উদ্যোগকে।
আত্মিকের ইটভাটা স্কুল সম্পর্কে আরো আপডেট পেতে যুক্ত হন আমাদের ফেসবুক প্রোফাইল Athmik Athmik এর সাথে, লাইক করুন আমাদের ফেসবুক পেজ Athmik Hooghly, অবশ্যই ভিজিট করুন আমাদের ওয়েবসাইট www.athmik.org.in