12/09/2022
অণুগল্প : সাজ
লেখিকা : রাখী চন্দ্র দাস
“একটু লিপিস্টিক লাগিয়ে দাও না মা!”
“এইটুকু বয়েস থেকে এত সাজতে নেই। বড় হও তারপর অনেক দিন পড়ে আছে সাজগোজ করার।”
বড় হলাম...
“শোন কলেজে যাচ্ছিস, নাকি প্রেম করতে? এত সেজে যাবার কী আছে? দিনকাল ভালো নয়। বড় হচ্ছিস তো! জিন্স ছেড়ে চুরিদার পরবি।”
বিয়ের প্রথম সম্বন্ধ এলো...
“এত সেজেগুজে বসার কী আছে? সিম্পলভাবেই বস। যাতে পরে ছেলে-পক্ষ বলতে না পারে যে, মেয়ের রূপ নেই বলে মেয়েকে সাজিয়ে বসিয়েছিল!”
বিয়ের পর...
“এত ভালো শাড়ি পরার কোনো দরকার নেই, আর মেকআপ বেশি করবে না। সবাইকে এত গয়না পরে দেখাতে হবে না। বিয়ের আগে যা সাজার সেজে নিয়েছ। এখন এত সেজে পরপুরুষকে আকর্ষিত করার মানে হয় না।”
সন্তান জন্মের পর...
“ছেলে-মেয়ে বড় হচ্ছে, এখনও এত সাজের বাহার কিসের? এখন ওদের সাজবার বয়স।”
শাশুড়ি হলাম...
“এত ম্যাচিং করে ব্লাউজ পরার কী আছে! এই বয়সে মানায়?”
ঠাকুমা হলাম...
“কাল নাতির অন্নপ্রাশন, শেষ বয়েসে যেন আবার রঙচঙে শাড়ি খুঁজতে যেও না।”
“ওরে আজ এত সাজাচ্ছিস কেন আমাকে? এত টুকটুকে লাল শাড়ি আমাকে মানাবে না; সাথে আবার ম্যাচিং ব্লাউজ! আরে এরকম এত ভর্তি করে সিঁদুর পরি না আমি! আলতা পরাচ্ছিস, মেঝেতে দাগ লাগলে উঠবে না।”
জীবনের এতগুলো বছরের ‘সাজতে মানা’ তকমাটা আজ চার কাঁধে হরির বোলে হারিয়ে গেল!
বল হরি...
লেখা চয়ন ও প্রকাশনায় : অলিখিত , প্রান্তিকা ,অলীক
প্রুফ রিড ও সহযোগি :পূজা, তামান্না।
#পাঁচমেশালী #পাঁচমেশালী